নিহন হিদানকিওর সহ-সভাপতি
‘গাজার অবস্থা বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী জাপানের মতোই’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩০ পিএম
গাজার বর্তমান অবস্থা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী জাপানের মতো বলে মন্তব্য করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী জাপানি সংগঠন নিহন হিদানকিওর সহ-সভাপতি তশিয়ুকি মিমাকি। শুক্রবার পুরষ্কার নেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
এ বিষয়ে রয়টার্স ও দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার উদ্যোগ ও প্রচারণার স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছে নিহন হিদানকিও। হিরোশিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় যারা বেঁচে গেছেন, তাদেরকে নিয়ে পরমাণু অস্ত্র-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছে সংগঠনটি।
শুক্রবার পুরস্কার নেওয়ার সময় অশ্রুসিক্ত হয়ে গাজার প্রসঙ্গ তোলেন মিমাকি। তিনি বলেন, ‘গাজার দিকে তাকান। রক্তাক্ত শিশুর দেহ ধরে আছেন বাবা-মায়েরা। এটা তো ৮০ বছর আগের জাপানের মতোই। হিরোশিমা-নাগাসাকির শিশুরা তাদের বাবাকে হারিয়েছে যুদ্ধে, মাকে হারিয়েছে বোমা হামলায়’।
পারমাণবিক বোমা থেকে রক্ষা পাওয়া মিমাকি সম্ভাব্য পারমাণবিক বোমার ব্যবহার নিয়েও বিশ্বকে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক বোমার জন্য পৃথিবী শান্তিতে থাকে- এ কথাও বলা হয়। তবে সন্ত্রাসীরাও কিন্তু পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করতে পারে। যেমন- রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যবহার করতে পারে, ইসরাইল গাজায় ব্যবহার করতে পারে’।
জেনেভা-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইউরো-মেড গত এপ্রিলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, তখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ৭০ হাজার টনেরও বেশি বিস্ফোরক ফেলেছে ইসরাইল।
মার্কিন জ্বালানি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মোট ৩৬ হাজার টন বিস্ফোরক ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এতে হিরোশিমাতে প্রায় ১,৪০,০০০ এবং নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪,০০০ মানুষ প্রাণ হারায় এবং পরবর্তীতে এই দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় আরও ২১৪,০০০ জনের।
জাপানের আসাহি শিমবুন-এর তথ্য অনুযায়ী, বোমার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগসমূহের ওপর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য গণনায় ধরে হিরোশিমায় ২,৩৭,০০০ এবং নাগাসাকিতে ১,৩৫,০০০ লোকের মৃত্যু ঘটে। যাদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক।
এদিকে, গাজায় গত এক বছর ধরে চলমান ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে, আহত হয়েছে আরও প্রায় এক লাখ মানুষ। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি।