Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ইরানি হামলার ‘গুরুতর’ জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল

নাজমুশ শাহাদাৎ

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম

ইরানি হামলার ‘গুরুতর’ জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) শনিবার ঘোষণা করেছে যে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। যেহেতু ইরান ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, সেহেতু এর ‘গুরুতর’ জবাবই দেবে ইসরাইল।

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান এই সংঘর্ষ সাতটি ভিন্ন ভিন্ন ফ্রন্টে বিস্তৃত বলেও জানিয়েছে আইডিএফ। তাদের মতে, গাজা এবং পশ্চিম তীরে চলমান যুদ্ধের পাশাপাশি ইসরাইলি বাহিনী লেবানন, ইরান, ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাকের প্রোক্সি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে।

আইডিএফ তাদের এই লড়াইকে ইরানের সঙ্গে একটি প্রত্যক্ষ যুদ্ধ হিসেবেই দেখছে এবং আশা করছে যে, ইরানি বাহিনী কেবল তাদের প্রোক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর মনোনিবেশ না করে তাদের নিজস্ব কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকবে।

যদিও ইসরাইলি বাহিনী একটি ‘গুরুতর’ প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তারা এই প্রতিশোধের নির্দিষ্টতা প্রকাশ করেনি। আইডিএফের মতে, ইরান ইসরাইলের দিকে ২০১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে কিছু সংখ্যক টার্গেটে আঘাত হেনেছে।

এই পরিস্থিতিতে আইডিএফ-এর মধ্যে একটি বিস্তৃত সুপারিশ রয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, ইরানের হামলার জবাব দেওয়া উচিত। যা ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি সম্ভাব্য সুযোগগুলোকে সর্বাধিক কাজে লাগাতে সাহায্য করবে।

আইডিএফ ইরানের বিরুদ্ধে সিরিয়ায় তাদের সামরিক অবস্থানে আক্রমণের হুমকি দিয়েছে। যা হিজবুল্লাহর ব্যবহারের জন্য অস্ত্রভাণ্ডার হিসেবে সুরক্ষিত। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী অস্ত্র পাচারের বিরুদ্ধেও তাদের অভিযানের সংকল্পে জোর দিয়েছে।

লেবাননে আক্রমণের সার্বিক অবস্থা

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বর্তমানে লেবাননে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালাচ্ছে, যা হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিত হামলারই অংশ। এর মধ্যে হিজবুল্লাহর সদস্যদের নিষ্ক্রিয় করতেও কাজ করা হচ্ছে। যাতে অধিকৃত উত্তর ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে নিরাপদে ফিরতে পারেন। 

সেখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র, বিশেষ করে বেশ কিছু কোরনেট ক্ষেপণাস্ত্র খুঁজে পেয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। আইডিএফের আনুমানিক হিসাব অনুসারে, তাদের হামলায় গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় ৪০০ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছে।

এছাড়াও বৈরুতে হিজবুল্লাহর বিভিন্ন কমান্ড কেন্দ্র, গুদাম এবং শিয়া-প্রধান দক্ষিণ উপশহর দাহিয়েহ-তে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অঞ্চলটি প্রায় সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক নাগরিকমুক্ত হয়ে গেছে। এ এলাকার হিজবুল্লাহ কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাগুলোতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে।

আইডিএফ বর্তমানে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যে, লেবাননের আরও কোন কোন স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে এবং কোন কোন অবস্থানে নয়। সেই সঙ্গে অস্ত্র পাচারের জন্য সিরিয়া থেকে লেবাননে যাওয়ার সামরিক এবং বেসামরিক সীমান্ত পয়েন্টগুলোকেও টার্গেট করা হচ্ছে। সেসব জায়গায় ড্রোন নজরদারিও অব্যাহত রয়েছে।

গাজা এবং ফিলাডেলফি করিডোর

এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যাকার ফিলাডেলফি করিডোরের অধিকাংশ টানেল আবিষ্কার এবং ধ্বংস করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে আইডিএফ। বর্তমানে হামাসের সঙ্গে রাফাহ এবং ফিলাডেলফি করিডোরেই লড়াই চলমান। 

আইডিএফ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে, লেবাননের সীমান্তে চলমান সংঘর্ষের পরেও সেখানে হিজবুল্লাহর অবস্থান বিদ্যমান থাকুক, সেটা তারা চায় না।

আইডিএফ-এর দাবি, লেবাননে বৃহত্তর পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেখানে লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি ব্যাপক লড়াই এখনও বিদ্যমান। বর্তমান লড়াই থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ লেবানন এবং গোটা ইসরাইলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পরিবর্তনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

পশ্চিম তীরের অবস্থা

আইডিএফ জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কাউন্টার অ্যাটাক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। যার মধ্যে একটি ছিল তুলকারেমে, যেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সম্প্রতি ইসরাইলি বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছে।  

আইডিএফ-এর দাবি, সেখানে হামাসের একটি বড় ধরনের হামলার জন্য একটি প্রধান পরিকল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে এবং ওই এলাকায় রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা হয়েছে।

এদিকে ইসরাইলি বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ডে চালানো অপারেশনগুলোকে আরও বাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে। যা ভবিষ্যতে যেকোনো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের প্রতি নির্দেশ করে।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

ইসরাইল তার মার্কিন ও অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে আরও সহযোগিতার প্রত্যাশা করছে। যারা কিনা ইরানের হামলার বিরুদ্ধে ইসরাইলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আগ্রহী। 

এ বিষয়ে আইডিএফ জানিয়েছে, পশ্চিমা বিশ্ব বোঝে যে ইসরাইল লেবানন এবং গাজায় সব রকমের হুমকি নির্মূল করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং ইরানের আক্রমণ অগ্রহণযোগ্য। সূত্র: দ্য জেরুসালেম পোস্ট

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম