ইসরাইলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: আন্তর্জাতিক আইন কি বলে?
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৪ পিএম
গত মঙ্গলবার রাতে ইসরাইলে প্রায় দুই শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। যা মূলত তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা ও লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরাইলের অভিযানকে কেন্দ্র করে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ছিল।
এটি ছিল গত পাঁচ মাসের মধ্যে ইরানের দ্বিতীয় বড় ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ। এর আগে গত এপ্রিলে প্রথমবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ চালায় দেশটি।
ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, এ হামলায় তারা তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
মঙ্গলবার রাতের ওই হামলার পর এখন গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের দামামা প্রায় বেজে উঠেছে। ইসরাইলি যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যেমন পালটা আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন, তেমনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইরানকে ভবিষ্যতের জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনী দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক আইনে ঘোষিত আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করে মঙ্গলবার রাতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইরান নতুন করে ইসরাইলের যেকোনো ধরনের আগ্রাসী সামরিক তৎপরতার মোকাবিলায় নিজের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে এবং প্রয়োজনে এ ধরনের আরো হামলা চালাতে মোটেও কুণ্ঠিত হবে না।
অপারেশন ট্রু প্রমিজ-২ নিয়ে ব্রিটিশ, জার্মান ও ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি।
এসব ফোনালাপে তিনি বলেন, ওই হামলায় ইরান জাতিসংঘ ঘোষণার ৫১ নম্বর ধারা অনুযায়ী আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছে মাত্র। এক্ষেত্রে ইরান কোনো বেসামরিক স্থাপনা নয় বরং ইসরাইলের নিরাপত্তা ও সামরিক স্থাপনাগুলোকে টার্গেট করেছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি সাঈদ ইরাভানি ইসরাইলে তার দেশের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পর্কে বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের হাতে ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন, তেল আবিবের হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ, আইআরজিসি কমান্ডার সাইয়্যেদ আব্বাস নিলফোরুশনের শাহাদাত এবং লেবানন ও ফিলিস্তিনের নিরপরাধ নারী, পুরুষ ও শিশুদের রক্তপাতের ব্যাপারে বেশ কিছুদিন ধৈর্যধারণ করার পর ইরান অবশেষে গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার প্রয়োগ করে ইসরাইলের বিভিন্ন ঘাঁটি লক্ষ্য করে অন্তত ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
জাতিসংঘ ঘোষণার ৫১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে: এই বিশ্ব সংস্থার কোনো সদস্য দেশ সশস্ত্র আগ্রাসনের শিকার হলে দেশটি আত্মরক্ষার স্বার্থে যদি পাল্টা ব্যবস্থা নেয় তাহলে সেটি আগ্রাসী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হবে না বরং তার এ পদক্ষেপ হবে সম্পূর্ণ বৈধ।
পার্সটুডে