Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

হাসান নাসারুল্লাহর মৃত্যুর পর হিজবুল্লাহ, ইরান কী করবে?

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ পিএম

হাসান নাসারুল্লাহর মৃত্যুর পর হিজবুল্লাহ, ইরান কী করবে?

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসারুল্লাহর মৃত্যু ‘প্রতিশোধহীন’ যাবে না। একই সাথে তিনি পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছেন।

ইরান একই সাথে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভা জরুরি ভিত্তিতে ডাকার আহ্বান জানিয়েছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নাসারুল্লাহর মৃত্যুকে ‘ঐতিহাসিক মোড় ঘুরানো ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই হত্যাকাণ্ডকে ‘ন্যায়বিচারমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে আন্ত:সীমান্ত লড়াই অব্যাহত আছে।

হিজবুল্লাহ এখন কী করবে

একের পর এক আঘাতে জর্জরিত হিজবুল্লাহ। পেজার ও ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণের অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনায় এর যোগাযোগ কাঠামো এবং বিমান হামলায় এর অস্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্য নিরাপত্তা বিশ্লেষক মোহাম্মেদ আল-বাশা বলেছেন: “হাসান নাসারুল্লাহকে হারানোর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়বে, গোষ্ঠীটি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি স্বল্প মেয়াদে এর রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলকে পরিবর্তন করবে।

তবে ইসরায়েল বিরোধী এই সংগঠনটি হুট করে ক্ষান্ত দেবে এমন প্রত্যাশা কিংবা ইসরায়েলের চাওয়া অনুযায়ী শান্তির পথে আসবে তা সম্ভবত হবে না।

হিজবুল্লাহ ইতোমধ্যেই লড়াই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। দলটির এখনো হাজার হাজার যোদ্ধা আছে।

এদের অনেকেরই সিরিয়া যুদ্ধে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা আছে এবং তারা প্রতিশোধ নেয়ার দাবি করেছে।

সংগঠনটির এখনো যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র আছে, যার অনেকগুলোই দূরপাল্লার। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার মতো অস্ত্র আছে, যা তেল আবিব ও অন্য শহরগুলোতে পৌঁছাতে পারে।

নিজেরা আরও ধ্বংসের লক্ষ্যে পরিণত হওয়া বা নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগে সেগুলো ব্যবহারের জন্য গোষ্ঠীটির ভেতরে চাপ বাড়ছে।

ইরান কী করবে?

সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড হিজবুল্লাহর মতো ইরানের জন্যও একটি বড় ধাক্কা। দেশটি ইতোমধ্যেই পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছে।

এছাড়া দেশটি তাদের নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনিকেও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে গোপন জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে।

তেহরানের গেস্ট হাউজে ইসমাইল হানিয়ার অপমানজনক হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ ইরান এখনো নিতে পারেনি।

পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইরানের বেশ কিছু সশস্ত্র সহযোগী গোষ্ঠী আছে। যেটি তথাকথিত ‘প্রতিরোধের অক্ষ’।

হিজবুল্লাহর মতো ইয়েমেনে এর আছে হুতি এবং ইরাক আর সিরিয়ায় আছে কয়েকটি গোষ্ঠী। ইরান এসব গোষ্ঠীকে ইসরায়েলে এবং ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে হামলা করতে বলতে পারে।

কিন্তু যেই পদক্ষেপই ইরান নিক না কেন সেটি হবে যুদ্ধের জন্য বন্দুকে চাপ দেওয়ার মতো, যাতে তারা জয়ের খুব একটা আশা করতে পারে না।

ইসরায়েল কী করবে?

এই হত্যাকাণ্ডের (হাসান নাসারুল্লাহর) আগে কারও কোন সন্দেহ থাকলেও এখন আর নেই।

যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টি রাষ্ট্র একুশ দিনের যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে সে অনুযায়ী সামরিক অভিযান বন্ধ করার কোন লক্ষ্য পরিষ্কারভাবেই ইসরায়েলের নেই।

তাদের সামরিক বাহিনী মনে করে হিজবুল্লাহ এখন ব্যাকফুটে। সুতরাং ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি পুরোপুরি না যাওয়া পর্যন্ত তারা আরও আক্রমণ চালাতে চায়।

হিজবুল্লাহর আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা কম। এটা দেখা খুব একটা সহজ হবে না যে কীভাবে ইসরায়েল স্থল অভিযানে সৈন্য না পাঠিয়ে হিজবুল্লাহর আক্রমণের হুমকি দূর করে তাদের যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করে।

ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স অবশ্য সীমান্তের কাছে তাদের পদাতিক বাহিনীর প্রশিক্ষণের ফুটেজ প্রকাশ করেছে।

তবে সবশেষ যুদ্ধের পর হিজবুল্লাহ আঠারো বছর সময় ব্যয় করে পরবর্তী যুদ্ধের পর প্রশিক্ষণ নিয়েছে।

মৃত্যুর আগে সবশেষ বক্তৃতায় নাসারুল্লাহ তার অনুসারীদের বলেছেন দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের অনুপ্রবেশ তার ভাষায় হবে ‘একটি ঐতিহাসিক সুযোগ’।

আইডিএফের জন্য লেবাননে যাওয়া সহজ হবে কিন্তু গাজার মতো বেরিয়ে আসতে হলে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম