Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

আফ্রিকান শরণার্থীদের নিয়ে ইসরাইলের ‘গোপন অভিসন্ধি’ ফাঁস

Icon

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম

আফ্রিকান শরণার্থীদের নিয়ে ইসরাইলের ‘গোপন অভিসন্ধি’ ফাঁস

আফ্রিকান আশ্রয়প্রার্থীদের সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের বিনিময়ে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে ইসরাইল।

সম্প্রতি গাজা যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার আফ্রিকান শরণার্থীদের নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছে হিব্রু সংবাদমাধ্যম হারেৎজ।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইসরাইলের এ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ১০,০০০ সৈন্যের ঘাটতি পূরণ করা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সমন্বয় করবে এবং ইসরাইলি সেনাবাহিনী ও অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষণের তত্ত্বাবধান করবে। 

জানা গেছে, ইসরাইলে প্রায় ৩০ হাজার আফ্রিকান আশ্রয়প্রার্থী রয়েছে। যাদের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার জনই ইসরাইলে জন্মগ্রহণ করেছে। তবে তাদের বেশিরভাগেরই কোনো স্থায়ী অবস্থান নেই।

ইসরাইলে বেড়ে ওঠা এবং স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনা করা ইরিত্রিয়ান শরণার্থী আরিম তিমি ইয়ামান হারেৎজ-কে বলেন, ‘আমার বন্ধুদের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু আমাকে সমাজের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে না। এটি অপমানজনক’।

একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির দৃষ্টিতে এটি নিছক শোষণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ২১ বছর বয়সি শরণার্থী পানান সলোমন। তবে তিনি যোগ করেন, ‘ছোটবেলা থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। যারা এ ধরনের অনুভূতি অনুভব করেন না, তারা হয়তো একে শোষণ হিসেবে দেখবেন। কিন্তু যারা কোনো স্থায়ী পরিচয় পাননি, তাদের অন্য কোনো উপায় নেই’।

ইসরাইল জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনের সদস্য হলেও, তারা খুব কম সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। হিব্রু ইমিগ্র্যান্ট এইড সোসাইটির (HIAS) মতে, ২০১২ সাল পর্যন্ত সুদান এবং ইরিত্রিয়ান শরণার্থীদের আশ্রয়ের আবেদন প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়নি। সেই সঙ্গে পর্যালোচিত আবেদনের অনেকটাই কম, মাত্র ০.৫ শতাংশকে বৈধ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

ইসরাইল সরকারের প্রস্তাবিত ‘শর্তাধীন মুক্তি পারমিট’ শরণার্থীদের বহিষ্কার থেকে সুরক্ষা দিলেও, তাদের চিকিৎসা বা কল্যাণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। এর পাশাপাশি, পারমিট নবায়নের প্রক্রিয়াও ক্রমশ কঠিন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আরেক ইসরাইলি শরণার্থী ইয়ামান বলেন, ‘প্রতিবার যখন আমি আমার ভিসা নবায়ন করতে যাই, আমি সেখানে সরকারি পোস্টার দেখতে পাই, যেখানে তারা আমাকে টাকা দিয়ে স্বেচ্ছায় চলে যেতে বলে’।

হারেৎজের আগের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছিল যে, গাজায় ইসরাইলের হয়ে যুদ্ধ করা কোনো শরণার্থীই স্থায়ী অবস্থান পায়নি এবং তাদের নিয়োগের নৈতিক উদ্বেগগুলো এখনও সমাধান হয়নি। 

ইসরাইলি সেনাবাহিনী মূলত এসব শরণার্থীদের বিভিন্ন অপারেশনে ব্যবহার করেছে। তবে এ বিষয়ে সেন্সরের কারণে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা নিষিদ্ধ।

সেই সঙ্গে ইসরাইলের এমন পরিকল্পনার মাধ্যমে আফ্রিকান আশ্রয়প্রার্থীদের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত করার বিষয়টিও বেশ বিতর্কিত। এর সঙ্গে যুক্ত নৈতিক প্রশ্নগুলো এখনও বিবেচনায় আসেনি বলে উল্লেখ করেছে ইসরাইলি  সামরিক সূত্র।

(মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদন অনুসারে)

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম