তিন দিনে বাস্তুচ্যুত ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ পিএম
![তিন দিনে বাস্তুচ্যুত ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/09/27/Israeli-airstrike-Lebanon-27-66f6e20fdf99b.jpg)
গাজার পর এবার লেবাননে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে বেড়েই চলেছে নিহতের সংখ্যা। হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরাইলের ব্যাপক বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহতও হয়েছে বহু মানুষ।
শুক্রবার আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের সর্বশেষ হামলায় একদিনে ৯২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ।
লেবাননজুড়ে ইসরাইলের ব্যাপক বোমা হামলার কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিনে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এক বছর ধরে ইসরাইল ও হিজবুল্লার মধ্যে আন্তঃসীমান্ত লড়াই চলছে। এতে অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। বৃহস্পতিবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লার ড্রোন ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ সুরুর নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সেনাবাহিনী এ খবর জানিয়েছে।
ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহও এক বিবৃতিতে ৫১ বছর বয়সি মোহাম্মদ সুরুর নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।
এর আগে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের যুদ্ধবিমান সুরুরকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে তিনি নিহত হন। এছাড়া ইসরাইলের নৃশংস হামলায় ইতোমধ্যে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা হামাসের সমর্থনে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তা থামাবে না। দুটি সংগঠনই ইরান সমর্থিত।
সম্প্রতি গাজা থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে নজর ফেরানোর কথা জানিয়েছিল ইসরাইল সরকার। এরপর যোগাযোগযন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ভিত নাড়িয়ে দেয় ইসরাইল। ওই ঘটনাকে হিজবুল্লাহর ওপর বড় ধরনের হামলার পূর্বপ্রস্তুতি হিসাবে দেখা হচ্ছিল। এরই মধ্যে গত সোমবার থেকে গোটা লেবাননজুড়ে নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। সবচেয়ে বেশি হামলা হয় হিজবুল্লাহ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলে।
লেবাননের গণমাধ্যম বলছে, স্থানীয় সময় গত সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় ইসরাইলের বিমান হামলার প্রথম ঢেউ শুরু হয়। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সিডন, মারজেয়ুন, নাবাটিয়ে, বিনত জেবেইল, জেজ্জিন ও জাহরানি এবং পূর্বাঞ্চলীয় বেক্কা উপত্যকার জাহলে, বালবেক ও হারমাল জেলার কয়েক ডজন শহর, গ্রাম ও খোলা জায়গাকে লক্ষ্য করে দিনভর হামলা চালায় ইসরাইল। দখলদার দেশটির হামলায় এখন পর্যন্ত ৭শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এর মধ্যে সোমবার একদিনেই নিহত হয়েছেন ৪৯২ জন।
ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর পালটা-পালটিহামলার জের ধরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরাইলের এই অপরাধের জবাবে ইরান নিশ্চুপ থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচাই। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ১২টি দেশ হিজবুল্লাহর সঙ্গে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে ইসরাইল।
উলটো ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার সামরিক বাহিনীকে সর্বশক্তি দিয়ে লেবাননে হামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তবে একদিন যেতে না যেতেই সেই তিনিই আবার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার পক্ষে কথা বলেন।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সঙ্গে একমত।