পেজার হামলা, ইসরাইলের পরিকল্পিত যুদ্ধ নাকি মানসিক আক্রমণ?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৭ পিএম
দখলদার ইসরাইল সম্প্রতি লেবানন-ইসরাইল সীমান্তে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের মাধ্যমে হিজবুল্লাহর ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরাইলের এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো- হিজবুল্লাহকে সীমান্ত থেকে সরে যেতে বাধ্য করা এবং গাজার যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই সীমান্তে হামলা বন্ধ করার দাবিও বাতিল করা।
পশ্চিমা ও লেবানিজ মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে চলমান আলোচনার মধ্যে হিজবুল্লাহ এ দাবি জানিয়ে আসছিল।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লেবাননে গত মঙ্গলবার ও বুধবার পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ফলে ৩২ জন নিহত এবং ৩ হাজার ২৫০ জন আহত হয়েছেন। এমন বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানোর মাধ্যমে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের লক্ষ্য হতে পারে, যাতে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্পূর্ণ যুদ্ধ এড়ানো যায়।
সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা মার্ক পলিমেরোপোলাসের মতে, ইসরাইল এ অভিযানটি পরিকল্পনা করেছে ‘যুদ্ধের প্রস্তুতি’ হিসেবে নয়, বরং হিজবুল্লাহকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। এই ‘যুদ্ধ এড়ানো’ কৌশলের মাধ্যমে ইসরাইল বোঝাতে চায় যে, এর চেয়েও বড় আকারের যুদ্ধ হিজবুল্লাহর জন্য বিপর্যয়কর হবে।
গত মঙ্গলবার ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ঘোষণা করে যে, গাজা যুদ্ধে আরও লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। যার মধ্যে লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহর উপস্থিতি কমানোর পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত।
২০০৬ সালে যুদ্ধের পর লেবাননের লিতানি নদীর উত্তরে হিজবুল্লাহর বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা এখন পুনর্বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন ভাষণে ইসরাইলের ওই হামলাকে ইসরাইলের ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে মন্তব্য করেছেন। সেই সঙ্গে এর প্রতিশোধ নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, মঙ্গল ও বুধবারের গণহত্যাকে আপনি যুদ্ধাপরাধ, যুদ্ধ ঘোষণাসহ যেকোনো কিছু বলতে পারেন। শত্রু রা এ হামলার মাধ্যমে সব ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছে এবং সব আইন লঙ্ঘন করেছে। এটি একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল অভিযান।
সেই সঙ্গে, ‘গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত লেবানন থেকে ইসরাইলি সীমান্তে হামলা বন্ধ হবে না' বলেও হুঁশিয়ারি দেন নাসরাল্লাহ।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল হিজবুল্লাহর কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কে হামলা চালিয়ে কৌশলগত সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করছে। তবে এটি সম্ভবত পুরোপুরি যুদ্ধের সূচনা নয়। একে হিজবুল্লাহর মনোবল ভাঙার জন্য একটি মানসিক আক্রমণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট