পাকিস্তানে কয়েক ঘণ্টার প্রাণঘাতী হামলায় নিহত ৭৪
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
জঙ্গিদের ভয়াবহ নৃশংসতা দেখল পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশ। রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে অন্তত ছয়টি প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে প্রদেশটিতে। এসব হামলায় কমপক্ষে ৭৪ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলাগুলো বেলুচিস্তানে সহিংসতা বৃদ্ধির ভয়াবহতার দিকেই ইঙ্গিত করে। আলজাজিরা।
বেলুচিস্তান এমন একটি অঞ্চল যেখানে কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ঘন ঘন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে। তবে বেলুচিস্তান ও পাঞ্জাব সীমান্তের কাছে অবস্থিত মুসাখেল জেলার রারাশাম এলাকায় সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের তথ্য অনুসারে, রোববার রাতে কমপক্ষে ২৩ জনকে তাদের গাড়ি থেকে টেনে বের করে আনা হয়েছিল এবং পাঞ্জাবি অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে তাদের পরিচয় জানার পর তাদের একে একে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এ ছাড়া প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৪০ কিলোমিটার (৮৭ মাইল) দক্ষিণে কালাত জেলায় আইন প্রয়োগকারী কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। সেই হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আবার কোয়েটার দক্ষিণ-পূর্বে বোলান জেলায় পাঞ্জাবের চারজনসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। আরও বিচ্ছিন্ন কয়েকটি হামলায় পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ সদস্যসহ ১৪ জনকে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এসব হামলায় নিরাপত্তা বাহিনী পালটা জবাব দিতে গিয়ে ২১ জঙ্গিকে হত্যা করেছে।
চলতি বছর বেলুচিস্তানে বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিক, আইন প্রয়োগকারী কর্মী এবং রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো লক্ষ্য করে সশস্ত্র ব্যক্তিরা হামলা চালিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, সাম্প্রতিক আক্রমণগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো হামলার পরিধি বাড়িয়েছে এবং তাদের সাহসিকতা এবং আক্রমণের ক্ষেত্র পরিবর্তন হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং পাক ইনস্টিটিউট অব পিস স্টাডিজের (পিআইপিএস) পরিচালক মুহম্মদ আমির রানা আলজাজিরাকে বলেছেন, ‘গত বছরের মে মাসেও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বড় ধরনের হামলা হয়েছিল। কিন্তু গত দুদিন ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো উল্লেখ করার মতো। মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছে, রেললাইনের ক্ষতি করা হচ্ছে। তারা (সন্ত্রাসীরা) যেভাবে হামলার বিস্তার ঘটাচ্ছে সেটা নজিরবিহীন।
তারা পাঞ্জাবে বা পাঞ্জাবের কাছে হামলার বিস্তার ঘটিয়ে ক্ষমতার প্রদর্শন করছে।’ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পাঞ্জাব পাকিস্তানের বৃহত্তম, সবচেয়ে সমৃদ্ধ এবং সবচেয়ে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী প্রদেশ। সেখানে কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এর আগে চীনা নাগরিক এবং বিভিন্ন প্রকল্পের ওপর হামলা হয়। এর মধ্য দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এই বার্তা পাঠাতে চায় যে, বেলুচিস্তানে বহিরাগতরা নিরাপদ নয়।