Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলে সমরশক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম

ইসরাইলে সমরশক্তি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। পালটাপালটি আক্রমণের হুমকি দিয়ে আসছে ইরান-ইসরাইল। বৈরি এ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করবে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ইরান ও তার মিত্রদের সম্ভাব্য হামলা থেকে ইসরাইলকে রক্ষা করতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। 

এক বিবৃতিতে পেন্টাগন বলেছে, ‘নতুন যুদ্ধ জাহাজ ও যুদ্ধ বিমান মোতায়েন মার্কিন বাহিনী সুরক্ষার উন্নতি ঘটাবে পাশাপাশি ইসরাইলের প্রতিরক্ষার জন্য সমর্থন বাড়াবে। এছাড়া নিশ্চিত করবে যে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে প্রস্তুত।’ 

পেন্টাগন জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে রণতরী ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্টের পরিবর্তে ইউএসএস আব্রাহাম লিঙ্কন পাঠানো হয়েছে। এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, প্রতিরক্ষা সক্ষম ক্রুজার, ডেস্ট্রয়ার এবং একটি নতুন ফাইটার স্কোয়াড্রন পাঠানোর কথা জানিয়েছেন। 

এছাড়া পেন্টাগন আরও বলেছে, ইসরাইলকে রক্ষায় তার প্রতিশ্রুতি ‘ইস্পাত কঠিন’। মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বাড়তি প্রস্তুতিমূলক অবস্থায় রাখা হয়েছে। 

গত বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে এক সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া। এ হত্যাকাণ্ডে হামাস ও ইরানের অভিযোগের তীর ইসরাইলের দিকেই। তার ঠিক আগের দিন লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকুর নিহত হন। 

এসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইরান, হামাস ও হিজবুল্লাহ ইসরাইলকে কড়া জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। হানিয়া ও ফুয়াদ শুকরিকে হত্যার পর আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা একটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক যুদ্ধ যেন শুরু না হয় তা নিশ্চিত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে লুফথানসা, ডেলটা, এয়ার ইন্ডিয়াসহ তেলআবিব বা বৈরুতগামী ফ্লাইট বাতিল করার জন্য প্রধান প্রধান এয়ারলাইনসগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছে। 

গত ১৩ এপ্রিলের আগেও মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান জোরালো করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ওই সময় ইসরাইলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সীমিত পরিসরে হামলা চালায় ইরান। তবে ইসরাইল ও এর কয়েকটি মিত্র দেশ দাবি করে, নিক্ষিপ্ত ওই সব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সবকটি ধ্বংস করেছে তারা। 

এর আগে, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল মার্কিন সামরিক বাহিনী মধ্যপ্রাচ্যে সেনা মোতায়েন জোরদার করেছিল। সে সময় ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে ইসরাইলে আক্রমণ শুরু করেছিল। তবে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্রের সহায়তায় প্রায় ৩০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সবকটিই ধ্বংস করে দেয়। 

অন্যদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বিমান হামলায় হামাসের এক কমান্ডারসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার তুলকারেমে একটি গাড়িতে এই হামলা করা হয়। এতে হামাস নেতা শেখ হাইথাম বালিদিসহ বাকি চারজনের মৃত্যু হয়। হামাস নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম সাফার বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। 

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, নিহত বাকি চারজনের পরিচয় জানা যায়নি। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, পশ্চিম তীরের তুলকারেম শহরের পাশে সশস্ত্র গোষ্ঠীর একটি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে তারা। 

সাফা জানিয়েছে, উত্তর তুলকারেমের আতিল ও যেইতা এলাকা সংযোগকারী সড়কে সশস্ত্র যোদ্ধাদের বহনকারী একটি গাড়িতে এ হামলা করা হয়। নিহতদের মধ্যে বালিদিও ছিলেন বলে জানিয়েছেন তুলকারেম সরকারি হাসপাতালের প্রধান ড. আমিন খাদের। 

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের বরাতে হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আল-মানারও চারজনের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করেছে। এদিকে জাতিসংঘ বলছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরাইলে হামলায় গাজা সিটির দুই-তৃতীয়াংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলায় দেড় লাখেরও বেশি স্থাপনা ধ্বংস হয়। 

ফিলিস্তিনের ৩৯ হাজার ৪৮০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৩১৪ জন শিশু মারা যায়। এছাড়াও ইসরাইলি হামলায় ৯১ হাজার ১২৮ জন মানুষ আহত হন। অন্যদিকে হামাসের হামলায় আনুমানিক এক হাজার ১৩৯ জন ইসরাইলি নিহত হন। এছাড়াও ২০০ জনের বেশি ইসরাইলি নাগরিককে বন্দি করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম