ইসরাইলি হামলায় আরও ৬৬ ফিলিস্তিনি নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা যেন মৃত্যুপুরী। ইসরাইলের একের পর এক গণবিধ্বংসী হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনের নারী, শিশুসহ বহু সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক। গত ৯ মাস ধরে উপত্যকাটিকে এক ভয়াবহ মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে ইসরাইলি সেনারা।
তাদের চলমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৪১ জন। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছে গেছে ৩৯ হাজার ৩২৪ জনে। আর আহতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ৯১ হাজার।
রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ইসরাইলি হামলায় ৩৬ জন নিহত এবং ১২০ জন আহত হয়েছে। হামলাটি মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহর একটি খোলা মাঠে অবস্থিত হাসপাতাল এবং আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে চালায় ইসরাইলি বাহিনী।
অন্যদিকে ইসরাইল-অধিকৃত গোলান মালভূমির মাজদাল শামস শহরে রকেট হামলায় দ্রুজ সম্প্রদায়ের ১২ যুবক নিহত হন। এ হামলার জন্য ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহকে অভিযুক্ত করেছে এবং প্রতিশোধ হিসাবে দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের গ্রাম এবং শহরগুলোতে বোমা হামলা করেছে। যদিও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ওই রকেট হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডে তার নৃশংস হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।