হিজাব ইস্যুতে তেহরানে তুর্কি এয়ারলাইন্সের অফিস বন্ধ করল ইরান
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১০:২৮ এএম
টার্কিশ এয়ারলাইন্স, ছবি: ভয়েস অব আমেরিকা
হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তুরস্কের পতাকাবাহী টার্কিশ এয়ারলাইন্সের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। দেশটির রাজধানী তেহরানে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ অফিসটি হঠাৎ বন্ধ করে দেয় ইরানি পুলিশ।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ও সৌদি-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এ খবর দিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজও পুলিশের বরাতে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) অভিযান চালিয়ে অফিসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক প্রচার না পেলেও গতকাল বুধবার (১০ জুলাই) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে বিষয়টি।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সোমবার টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ওই অফিসে যায়। সেখানকার নারী কর্মীদের হিজাব পরতে না দেখে সতর্ক করে পুলিশ। তখন তাৎক্ষণিক হিজাব পরতে হুমকিও দেওয়া হয়। বলা হয়, নারীদের মাথা ঢাকতে অস্বীকৃতি ইরানের আইনের লঙ্ঘন। ওই সময় নারী কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় পুলিশ।
পরের দিন পুলিশ আবারও সেখানে যায় এবং নারী কর্মীরা হিজাব না পরায় অফিসটি বন্ধ করে দেয় তারা।
তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, বুধবারও অফিসটি খোলার ব্যাপারে কিছু জানায়নি পুলিশ। এ ব্যাপারে টার্কিশ এয়ারলাইন্সও কোনো বিবৃতি দেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
ইরানে কর্মক্ষেত্রে ও ঘরের বাইরে হিজাব বা মাথা ঢাকা বাধ্যতামূলক। কর্মীরা হিজাব না পরায় গত কয়েক বছরে রেস্তোরাঁ, দোকান, ফার্মেসিসহ অসংখ্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নারীদের গ্রেফতার, জরিমানাসহ অন্যান্য শাস্তি হরহামেশাই দেওয়া হয়। এ নিয়ে দেশটিতে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এমনকি ২০২২ সালে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তাল হয় গোটা ইরান। সে সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কিছু আন্দোলনকারী হতাহত হয়।
জানা যায়, এই মুহূর্তে ইরান ও তুরস্কের মধ্যে সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক বিরাজ করছে। ২০২৩ সালে উভয়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫.৪ বিলিয়ন ডলার। তুরস্কও ইরানিদের জন্য একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত বছর প্রায় ২.৫ মিলিয়ন ইরানি তুরস্কে ভ্রমণ করেছেন।
এছাড়া অন্যান্য দূরপাল্লার ফ্লাইটের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় যেতে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের ভ্রমণের সময় কম হওয়ায় ইরানিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তাও রয়েছে।