Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

মৃত কিশোরীকে ‘অলৌকিক শক্তি’তে বাঁচিয়ে তোলার দাবি করেছিলেন ভোলে বাবা!

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:২০ পিএম

মৃত কিশোরীকে ‘অলৌকিক শক্তি’তে বাঁচিয়ে তোলার দাবি করেছিলেন ভোলে বাবা!

‘অলৌকিক শক্তি’ দিয়ে মৃত ব্যক্তির দেহে প্রাণ ফিরিতে দিতে পারেন তিনি। ২৬ বছর আগে এমনই দাবি করে ভক্তদের মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা। তা প্রমাণ করতে এক কিশোরীর দেহ ‘কব্জা’ করেন। যদিও সেই ঘটনাই তাকে জেলের রাস্তা দেখিয়েছিল। ১৯৯৮ সালে গ্রেফতার হন ভোলে বাবা।

মঙ্গলবার ভারতের উত্তরপ্রদেশে ভোলে বাবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে অন্তত ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। এছাড়া শিশুও রয়েছে।

মঙ্গলবার কয়েক লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত ওই স্বঘোষিত ধর্ম প্রচারকের সভায়।

আবার এই ‘ভোলে বাবা’ কীভাবে ইভটিজিংয়ের দায়ে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়ে, জেল খেটে বেরিয়ে ধর্মগুরু হয়ে উঠলেন, সেটিও যেন এক সিনেমার গল্প।

এখন ওই স্বঘোষিত ধর্ম প্রচারকের খোঁজে তার কয়েকটি আশ্রমে তল্লাশি চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

শাহগঞ্জ থানার এসএইচও তেজবীর সিংহ জানিয়েছেন, পঙ্কজ কুমার নামে এক ব্যক্তির ভাইয়ের মেয়ে ক্যানসারে ভুগছিল। পঙ্কজ কুমারও ভোলে বাবার ভক্ত ছিলেন। তিনি জানান, তার ভাতিজি হঠাৎ এক দিন জ্ঞান হারান। তারপর জ্ঞান ফিরেও এসেছিল। কিন্তু তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল তার। 

এসএইচও তেজবীর জানান, কিশোরীর দেহ নিয়ে তার পরিজনেরা যখন শ্মশান পৌঁছেছিলেন সৎকারের জন্য, সেখানে ভোলে বাবা প্রায় ২০০ ভক্ত নিয়ে সেখানে হাজির হন। কিশোরীর পরিবারের কাছে দাবি করেন, তাকে ‘অলৌকিক শক্তি’ দিয়ে বাঁচিয়ে তুলবেন। তার পরই কিশোরীর দেন নিজের ‘কব্জায়’ নেন ভোলে বাবা।

ভারতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৭

এসএইচও জানান, খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ পৌঁছায়। পুলিশকে দেখেই ভোলে বাবার ভক্তেরা পাথর ছুড়তে শুরু করেন। যদিও ভোলে বাবা, তার স্ত্রী এবং বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভক্তদের মধ্যে প্রভাব এতটাই বৃদ্ধি করেছিলেন যে, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন, ভোলে বাবা সব সমস্যার সমাধান করতে পারেনি নিমেষেই। শুধু তাই-ই নয়, ‘ভূত-প্রেত’, ‘আত্মা’ও নাকি তার কাছে ‘বশ্যতা’ স্বীকার করত! এক কথায়, ভোলে বাবা হয়ে উঠেছিলেন ভক্তদের জীবনের ‘মসিহা’।

উত্তর প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত নারায়ণ সরকার হরির আসল নাম সুরজ পাল জাটভ।

কাসগঞ্জ জেলার বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা জাটভ উত্তর প্রদেশ পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। চাকরি জীবনের গোড়ার দিকে বেশ কয়েক বছর পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন তিনি। প্রায় ১৮টি থানা এলাকায় কাজ করেছেন তিনি।

প্রায় ২৮ বছর আগে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। প্রথমে সাসপেন্ড করা হয়েছিল জাটভকে, পরে বরখাস্ত হন তিনি।

ইটাওয়া জেলার সিনিয়র পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই ইভটিজিংয়ের ঘটনায় বেশ লম্বা সময় জেলে ছিলেন সুরজ পাল জাটভ। কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে ‘বাবা’র রূপ ধরেন তিনি।

বরখাস্ত হওয়ার পরে সুরজপাল জাটভ আদালতে গিয়েছিলেন নিজের চাকরি ফিরে পেতে। আদালত চাকরি ফিরিয়েও দিয়েছিল। কিন্তু ২০০২ সালে আগ্রা জেলায় কর্মরত অবস্থায় স্বেচ্ছায় অবসর নেন জাটভ।

এরপর তিনি ফিরে গিয়েছিলেন নিজের গ্রামের বাড়িতে। কিছুদিন পরে তিনি দাবি করতে থাকেন যে সরাসরি ঈশ্বরের সঙ্গে কথা হয় তার। এই সময় থেকেই নিজেকে ‘ভোলে বাবা’ হিসেবে তুলে ধরতে থাকেন জাটভ।

সেই ‘ভোলেবাবা’কে খুঁজছে পুলিশ

 
Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম