ইরানিদের ‘সংস্কারপন্থি’ প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার আহ্বান হাসান রুহানির
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের ‘সংস্কারপন্থী’ প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি মনে করেন, যিনি আগামী দিনে ইরানের নানাদিকের সংস্কারে মনোনিবেশ করবেন, তিনিই হবেন হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির স্থলাভিষিক্ত যোগ্য ব্যক্তি।
ইব্রাহিম রাইসি নিহতের পর দেশটির সংবিধান অনুযায়ী ৫০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নির্দেশ দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এরপর ২৮ জুনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইরানে শুক্রবার অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন হতে যাচ্ছে। কারণ এই নির্বাচনে প্রার্থীতা অনুমোদন নিয়ে ইতোমধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদকে অনুমোদন না দেওয়ায় ইরানের অভ্যন্তরে এবং বাইরে থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কারণ, মাহমুদ আহমেদিনেজাদ ইরানের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টদের মধ্যে একজন।
ইরানে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ৮০ জন প্রার্থী নিবন্ধন করেন। তবে সেখান থেকে মাত্র ছয় জনকে নির্বাচন করার অনুমতি দিয়েছে দেশটির অভিভাবক পরিষদ গার্ডিয়ান কাউন্সিল।
এই ছয়জনের মধ্যে বুধবার এক প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন। তার নাম আমির–হোসেইন গাজিজাদেহ হাশেমি। পেশায় চিকিৎসক ৫৩ বছর বয়সি চরম রক্ষণশীল গাজিজাদেহ হাশেমি রাইসি সরকারের একজন কট্টর সমর্থক।
গাজিজাদেহ সরে দাঁড়ানোয় এখন প্রার্থী থকলেন পাঁচজন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক এবং একমাত্র সংস্কারপন্থী প্রার্থী মাসউদ পেজেশকিয়ানই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন হাসান রুহানি।
তিনি বলেছেন, ইরানের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার যে অপছায়া রয়েছে, তা অপসারণে মাসুদ পেজেশকিয়ান কাজ করতে পারেন। পশ্চিমাদের ক্রমাগত নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটাই অস্থিতিশীল অবস্থায়।
রুহানি মাসউদ পেজেশকিয়ানের সততা এবং আনুগত্যের প্রশংসা করেন। সংস্কারবাদী অন্যান্য নেতারাও পেজেশকিয়ানকে সমর্থন করেছেন। এদের মধ্যে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফও রয়েছেন। খাতামি বলেছেন, শুক্রবার ইরানিদের পরিবর্তনের একটি সুযোগ হতে চলেছে।
৬৯ বছর বয়সী মাসউদ পেজেশকিয়ান একজন হার্ট সার্জন। ২০০৮ সাল থেকে পার্লামেন্টে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাবরিজের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন তিনি। ইরানের এই নেতা এবারের নির্বাচনে কট্টরপন্থী সংসদীয় স্পিকার মোহম্মদ বাগের গালিবাফ এবং অতি রক্ষণশীল সাবেক পারমাণবিক সাঈদ জালিলির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে আরও রয়েছেন- তেহরানের মেয়র আলিরেজা জাকানি এবং ধর্মীয় নেতা মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি।
তবে ইরান যেভাবে তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করে, তাতে বিশ্লেষকদের ধারণা- শুধু নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে পেজেশকিয়ানকে অনুমোদন করেছে গার্ডিয়ান কাউন্সিল। কারণ ইরানে রক্ষণশীল নেতৃত্ব ক্ষমতায় থাকলেও দেশটির সাধারণের মধ্যে ‘সংস্কারপন্থী’ নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। তথ্যসূত্র: আরব নিউজ