Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

মালয়েশিয়ায় ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা

Icon

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৪, ১১:১১ এএম

মালয়েশিয়ায় ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করলেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় উদযাপিত হলো ঈদ-উল-আজহা। আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর লা’ ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ তাকবির রায়া ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে মসজিদ প্রাঙ্গন। নতুন পোশাকে মসজিদের দিকে ছুটেন মানুষজন। এ যেন আল্লাহর সান্যিধ্যের চিরন্তনরূপ। এ বছর বাংলাদেশ ও মালায়শিয়ায় একইদিনে ঈদ উদযাপন হচ্ছে।

ইয়াং দি-পার্টুয়ান আগাং, সুলতান ইব্রাহিম এবং রাজা পেরমাইসুরি আগং, রাজা জারিথ সোফিয়াহ দেশের সকল মুসলমানদেরকে ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

সূর্য ওঠার আগেই জাতীয় মসজিদ নেগারা ও পুত্রযায়া মসজিদ পুত্রা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সেখানে নামাজ পড়তে আসা মালয়েশিয়ানদেও পাশাপাশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশের নাগরিক ছিলেন। মালশিয়ান ছেলেরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘বাজু মালায়ু’ পরে সালাত আদায় করতে আসেন।

সোমবার রাজধানী কুয়ালালামপুরের জাতীয় মসজিদ (নেগারায়) ও পুত্রযায়া মসজিদ পুত্রায় মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শুরুর আগে বয়ান পেশ করেন মসজিদ নেগারার গ্র্যান্ড ইমাম এহসান মোহাম্মদ হোসনি এবং মসজিদ পুত্রায় বয়ান পেশ করেন, পুত্রা মসজিদের গ্র্যান্ড ইমাম, সালাহউদ্দিন হাজী গোজালি।
নামাজের আগে কুরবানির তাৎপর্য নিয়ে খতিবরা তাদের বয়ানে বলেন, কুরবানি হলো আল্লাহ তাআলার জন্য ত্যাগ-তিতীক্ষা প্রদর্শনের অন্যতম ইবাদত। যা যুগে যুগে সব নবী-রাসূলের জন্যই বিধিবদ্ধ ছিল। আর বর্তমান কুরবানি আমাদের জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক পালনীয় ঐতিহাসিক আদর্শ ইবাদত। কুরবানি দেওয়ার কিছু মাসআলা ও মাসায়েল নামাজ আদায়কারীদের সামনে তুলে ধরে খতিবরা বলেন, ঈদ উৎসবকে সত্যিকার পরম করুণাময়ের কাছে গৃহীত করতে চাইলে সবধরনের কৃত্রিমতা ও লৌকিকতার মুখোশ ঝেড়ে ফেলে অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠার আহ্বান জানায় ঈদ।

আল্লাহ এবং তার রাসুল (সা.) এর আদর্শের সীমানা ডিঙিয়ে যাতে এর কোনো অমর্যাদা না হয়, সেদিকে আমাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

মসজিদ পুত্রায় আনোয়ার ইব্রাহিম সবুজ মালয় পোশাক পরে সকাল ৭.৫১ টায় তাঁর স্ত্রী দাতুক সেরি ডঃ ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল সাথে নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উপমন্ত্রী (ধর্ম বিষয়ক) ডাঃ জুলকিফলি হাসান তাদের আগমনকে স্বাগত জানান।
এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন মাহাথির মোহাম্মদ মসজিদ পুত্রায় নামাজ আদায় করেন। মসজিদ পুত্রায় প্রায় ২০ হাজার মসল্লী নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন মাহাথির।

খুতবায় মুসলিম উম্মাহর মধ্যে সম্পর্ক উন্নত করতে দেশকে সামগ্রিকভাবে গড়ে তোলার জন্য মুসলিমদের পারস্পরিক ভালোবাসা ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতা এবং দৃঢ় ঐক্যে বসবাস করার আহ্বান জানানো হয়। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের পর মুসল্লিরা পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। নামাজে আসা শিশুরাও পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি ও ঈদ সেলফিতে মেতে উঠেন।

এদিকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শহরে ঈদ-উল- আজহা উদযাপন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। হাংতোয়া মসজিদ আল বোখারি, মসজিদ জামেক, তিতিওয়াংসা বায়তুল মোকাররাম, কোতারায়া বাংলা মসজিদ, ছুবাংজায়া বাংলা মসজিদ, ক্লাং, পেনাং, ছুঙ্গাই ভুলু, সেলায়ং পাছার পুচং, মালাক্কা, জহোরবারুতেও ঈদের নামাজ আদায় করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিদেশে থাকলেও তাদের মন পড়ে আছে বাংলাদেশে।

তাদের কাছে ঈদ মানে বিদেশে বসে দেশের স্মৃতিচারণা। নামাজ শেষে ঈদ সেলফির পাশাপাশি মোবাইল ফোনে দেশের প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রবাসীরা।

এদিকে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মো: শামীম আসান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ও মালয়েশিয়ান নাগরিকসহ সবাইকে পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি দেশে অবস্থিত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদেরও ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম