ভারতের লোকসভা নির্বাচন শেষে ইতোমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে সদ্য নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম। নতুন-পুরোনো মিলিয়ে এবারের বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে বৈচিত্র্য। তবে সদ্য এ নির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের ৯৩ শতাংশই কোটিপতি এবং ৪৬ শতাংশই ফৌজদারি মামলার আসামি। ফল প্রকাশের দুদিন পর বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে কাজ করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)।
প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, মোট ৫৪৩ জন নির্বাচিত এমপির মধ্যে ৫০৪ জন (৯৩%) কোটিপতি। ২০০৯ সালের জয়ী এমপিদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ ছিলেন কোটিপতি, ২০১৪ সালে কোটিপতি এমপির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮২ শতাংশ, শেষবার ২০১৯ সালে এমপিদের ৮৭ শতাংশ ছিলেন কোটিপতি। লোকসভার এই ৫০৪ জন কোটিপতি এমপিদের মধ্যে ২২৭ জনের (৪২ শতাংশ) মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি রুপি বা তারও বেশি। ১৭৪ জন এমপির (৩২ শতাংশ) সম্পদের পরিমাণ এক কোটি থেকে পাঁচ কোটি রুপি, ১০৩ জনের (১৯ শতাংশ) সম্পদের পরিমাণ পাঁচ থেকে ১০ কোটি রুপি।
এছাড়াও নবনির্বাচিত প্রার্থীদের ৫৪৩ জনের মধ্যে ২৫১ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর মামলায় অভিযুক্ত ১৭০ জন। নবনির্বাচিত এমপিদের মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রয়েছে, ১৫ জনের বিরুদ্ধে নারীদের বিরুদ্ধে যে কোনো অপরাধের অভিযোগ, দুুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং চারজনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ রয়েছে। এবারই প্রথম নয় এর আগেও ফৌজদারি মামলার অনেক আসামি লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক রাজনীতিক নির্বাচিত হয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালে মোট ২৩৩ জন সংসদ-সদস্য (৪৩ শতাংশ) নিজেদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৮৫ জন (৩৪ শতাংশ)।
২০০৯ সালে ছিল ১৬২ জন (৩০ শতাংশ) এবং ২০০৪ সালে ১২৫ জন (২৩ শতাংশ)। অর্থাৎ প্রতিবছরই নির্বাচিত ফৌজদারি মামলার আসামির সংখ্যা বেড়েছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ঘোষিত ফৌজদারি মামলায় সংসদ-সদস্যদের সংখ্যা ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। ফৌজদারি আসামিদের মধ্যে বিজেপির সদস্যদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিজেপির বিজয়ী ২৪০ জনের মধ্যে ৯৪ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আছে। আর কংগ্রেসের বিজয়ী ৯৯ সদস্যের মধ্যে ২১ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আছে।