ছবি: সংগৃহীত
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে সরকার গঠনের চেষ্টা করছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। সে কারণে সুযোগ বুঝে নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায়ে উঠেপড়ে লেগেছে শরিক দলগুলো; বিশেষ করে, চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি এবং নীতিশ কুমারের জেডিইউ। উভয় দলই নরেন্দ্র মোদির কাছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দাবি করেছে বলে শোনা যাচ্ছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (৫ জুন) মোদির বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিজেদের দাবি-দাওয়া পেশ করেছেন এনডিএ নেতারা। এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তুমুল দরকষাকষি চলছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।
শোনা যাচ্ছে, চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) পাঁচটি মন্ত্রী পদ দাবি করেছে, যার মধ্যে একটি অর্থ প্রতিমন্ত্রীর পদ। এছাড়া লোকসভার স্পিকারের পদও চেয়েছে তারা। পাশাপাশি, সড়ক, পঞ্চায়েতি রাজ, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও নজর রয়েছে দলটির। নির্বাচনে ১৬টি আসনে জয় পেয়েছে টিডিপি।
ভারতের লোকসভায় মুসলিম প্রার্থী জিতেছেন ২৪ জন
বিপরীতে, ১২ আসনে জয় পাওয়া জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) দুটি মন্ত্রণালয় এবং একটি প্রতিমন্ত্রী পদ পাওয়ার আশা করছে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, রেলমন্ত্রীর পদটি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
নীতিশ কুমারের দলটি নতুন এনডিএ সরকারের জন্য একটি সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য সমন্বয় কমিটি গঠনেও চাপ দিতে পারে। সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি হলো একটি রেজোল্যুশন, যা জোটে থাকা দলগুলোর অভিন্ন এজেন্ডাকে রূপরেখা দেয়।
অটল বিহারী বাজপেয়ীর শাসনামলে প্রয়াত জর্জ ফার্নান্দিস এই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। জেডিইউ সূত্রে খবর, নীতিশ কুমার এখন এই পদের সম্ভাব্য প্রার্থী।
সুযোগ নিচ্ছে অন্যরাও
শুধু টিডিপি ও জেডিইউ নয়, দরকষাকষি করছে এনডিএ জোটের অন্য শরিকরাও।
সূত্র বলছে, দুটি আসনে জয়ী জেডিএস সম্ভবত দলটির নেতা এইচডি কুমারস্বামীকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার জন্য চাপ দিতে পারে।
এছাড়া, এইচডি দেবগৌড়ার দল যেহেতু নিজেদের কৃষকের দল হিসেবে প্রচার করে, তাই তারা কৃষি মন্ত্রণালয় দাবি করতে পারে।
এনডিএ জোটের শরিকদের মধ্যে আরও যাদের সঙ্গে বিজেপির সমঝোতা করতে হতে পারে, তারা হলো- একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (সাতটি আসন) এবং চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (পাঁচটি আসন)।
অভিনেতা-রাজনীতিবিদ পবন কল্যাণের জনসেনা (দুটি আসন) কোনো কেন্দ্রীয় ভূমিকা চাইবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।
মোদীর আগের দুই সরকারে আপনা দলের (সোনেলাল) নেত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। এবার তার দলের আসন সংখ্যা দুই থেকে একে নেমে এসেছে। ফলে, তিনি মন্ত্রিত্ব ধরে রাখতে পারছেন কি না তা হয়তো শিগগির জানা পাবে।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৪০ আসনে জিতেছে। অর্থাৎ, লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে এখনো ৩২টি আসন দরকার তাদের। এর মধ্যে টিডিপি এবং জেডিইউ একসঙ্গে ২৮টি আসন দিলেও ম্যাজিক ফিগার অতিক্রম করতে অন্য শরিকদের ওপরও নির্ভর করতে হচ্ছে বিজেপিকে।
সূত্র: এনডিটিভি