উত্তরপ্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বোন প্রিয়াঙ্কাকে ক্রেডিট দিলেন রাহুল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রায় দিয়েছেন অখিলেশ-রাহুলদের পক্ষে। সংবিধান রক্ষার এই লড়াইয়ে জিতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন রাহুল।
উত্তরপ্রদেশ দেশের রাজনীতির হটস্পট, তা স্বীকার করেন বিজেপি বিরোধী শিবির। হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ল্যাবরেটরি সেই ‘রামরাজ্যে’তেই এবার বিজেপির অপ্রত্যাশিত হার!
বিজেপির শক্ত ঘাঁটি উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস জোট ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪৪টিতেই জয়লাভ করেছে।
ভোট গণনা যত এগিয়েছিল, লাল-সবুজ পতাকায় সাইকেল চিহ্ন উজ্জ্বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাকাসে হয়েছে গেরুয়া। অখিলেশের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে ইন্ডিয়া ব্লকের চিত্তাকর্ষক পারফরম্যান্সে তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ভূমিকাও স্বীকার করেছেন রাহুল।
গঙ্গা তীরের বারানসীসহ পূর্ব ও মধ্য উত্তরপ্রদেশ ঐতিহাসিকভাবে সমাজবাদী রাজনীতি, গান্ধীবাদী রাজনীতি, বামপন্থী রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র থাকলেও সাম্প্রতিক কালে দেখা গেছে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি তথা বিজেপি’র জয়-জয়াকার। ২০১৪ সালে বিজেপির ৭১টি আসনে এবং ২০১৯ সালে ৬২টি আসনে জয়লাভ করেছিল।
গত বিধানসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি যথেষ্ট লড়াইও দিয়েছিল এই রাজ্যে, আজ ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে যোগীরাজ্যে বিজেপি-বিরোধী রাজনীতির গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণিত হল।
ফল প্রকাশের পর রাহুল বলেন, ‘উত্তর প্রদেশের নির্বাচনি লড়াইয়ে আমার বোন প্রিয়াঙ্কার একটি বড় ভূমিকা ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশের মানুষ চমৎকার ভূমিকা নিয়েছেন। ইউপি’র লোকেরা দেশের রাজনীতি এবং সংবিধানের বিপদ বুঝতে পেরেছিলেন, তারা সংবিধানকে রক্ষা করলেন। কংগ্রেস পার্টি এবং ভারত জোটকে সমর্থন করার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত সমালোচনা কম হয়নি। তিনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন যে তার প্রার্থী না হওয়া ছিল একটি কৌশলগত বিষয়। একটি একক নির্বাচনি এলাকায় আবদ্ধ না হয়ে, তিনি আমেথি এবং রায়বরেলির মত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ফোকাস করে রাজ্য জুড়ে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত এই দুটি আসনেই কংগ্রেস জয়লাভ করেছে। আমেঠিতে, গান্ধী পরিবারের অনুগত কিশোরী লাল শর্মা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে পরাজিত করেছেন। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্র থেকেই রাহুল গান্ধী পরাজিত হয়েছিলেন স্মৃতি ইরানির কাছে।
রাহুল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন ছিল সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। তারা আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাতিল করেছিল, একজন মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে ভরেছিল। বিরোধী দলগুলি নানান ভাবে আক্রমণ করেছিল বিজেপি সরকার, তখন আমার মনে হয়েছিল, ভারতীয়রা সংবিধানের জন্য একসাথে লড়াই করবে। আজ এটি সত্য প্রমাণিত হল।’
নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ প্রবণতা অনুসারে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ২৯৫টি আসনে এগিয়ে বা জিতে রয়েছে। অন্যদিকে ইন্ডিয়া ব্লক ২৩১টি আসনে এবং অন্যান্য ১৭টিতে এগিয়ে রয়েছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় বিজেপি এখনও সরকার গড়তে পারেনি। তবে যে পক্ষই সরকার গড়ুক, ২০২৪ সালের নির্বাচনি জনমত দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে দেশের আগামী রাজনীতির জন্য।