বিশ্বজুড়ে ভয়ংকর রূপ নিয়েছিল করোনা মহামারি। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া এ মহামারিতে মৃত্যু হয়েছিল লাখ লাখ মানুষের। ২০২১ সালে এর সমাপ্তি ঘটলেও তার রেশ শেষ হয়নি এখনো। এই মহামারির জেরে বিশ্বজুড়ে গড় আয়ু প্রায় দুই মাস হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তাবিষয়ক অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। শনিবার ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
শুক্রবার নিজেদের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিসংখ্যানগত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। সেখানে বলা হয়েছে, ১৮ মাস হ্রাস পাওয়ার কারণে বিশ্বে বর্তমানে মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছর ৪ মাস। গড় আয়ু কমার পাশাপাশি এক বছর ৫ মাস হ্রাস পেয়েছে শারীরিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম থাকার গড় বয়সসীমাও।
ডব্লিউএইচও’র তথ্যানুসারে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শারীরিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম থাকার গড় বয়স নেমেছে ৬১ বছর ৯ মাসে। এই হ্রাসের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব আবার ফিরে গেছে ২০১২ সালে। ওই বছর বিশ্বজুড়ে মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছর ৪ মাস এবং গড় সুস্থ-সক্ষম থাকার বয়সসীমা ৬১ বছর ৯ মাস ছিল।
গত জানুয়ারিতে এ সম্পর্কিত একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে। সেখানে বলা হয়েছিল, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে গড় আয়ু কমেছে ১ বছর ৬ মাস। শুক্রবার এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, ‘গড় আয়ু হ্রাস পাওয়া এই তথ্য আমাদের বার্তা দিচ্ছে যে, শিগগিরই আমাদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর একটি মহামারি নিরাপত্তা চুক্তিতে আসা উচিত। এমন একটি চুক্তি যা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করবে, স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ নিশ্চিত করবে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমতা নিশ্চিত করবে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের গড় আয়ুর ওপর যে গভীর প্রভাব রেখে গেছে করোনা মহামারি, তা বিগত ৫০ বছরে অন্য কোনো রোগের বেলায় ঘটেনি।