একটা সময়ে পড়ালেখার জন্য শিক্ষার্থীদের মারধর করতেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের সেই শাসন শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক আশীর্বাদ মনে করত।
কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করা সম্পূর্ণ নিষেধ। শিক্ষার্থীদের মারধরের কারণে অনেক সময় শিক্ষককে লাঞ্ছিত হতে হয়। শুধু তাই নয়, ছাত্রকে মারধর করার কারণে শিক্ষক হত্যার ঘটনাও ঘটেছে।
সম্প্রতি ভারতের মুর্শিদাবাদে এক প্রধান শিক্ষকের মারধরের কারণে আল-আমিন নামে এক ছাত্রের কোমর ভেঙে গেছে। অভিভাবকরা জানান, আল-আমিনের অস্ত্রোপচার করতে হবে। প্রধান শিক্ষক চিকিৎসার সব খরচ বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
স্কুলের নির্ধারিত পোশাক পরিধান না করায় ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রকে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক। এতে ওই ছাত্রের কোমর ভেঙে যায় বলে অভিযোগ। প্রধান শিক্ষকের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গতকাল বুধবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গেছে।
কয়েক দিন আগে ভগবানগোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আল-আমিন হক স্কুলের ইউনিফর্ম পরে যায়নি। তাই প্রধান শিক্ষক নাজমুল হক তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তাতেই ছাত্রের কোমর ভেঙে যায় এবং এখন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে ভগবানগোলা নেতাজি মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়রা। পরে ভগবানগোলা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভগবানগোলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ছাত্রের পরিবার।
ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্র জানায়, ‘আমি একদিন স্কুলের পোশাক না পরে গিয়েছিলাম। তখন প্রধান শিক্ষক লাঠি দিয়ে খুব মারধর করেন। আমি অনেক দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলাম। এখনো আমি ঠিক মতো হাঁটতে পারছি না। হাঁটলেই পায়ে, কোমরে ব্যথা করছে।’
ছাত্রের বাবা ইসমাইল হক বলেন, ‘সেদিন বাড়িতে আমার মা মারা গিয়েছিল। তাই ছেলে স্কুলের পোশাক পরে যেতে পারেনি। এ কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হক আমার ছেলেকে মারধর করে কোমর ভেঙে দিয়েছেন। প্রথমে চিকিৎসার খরচের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে টাকা দেননি। এখন মারধর করার কথাও অস্বীকার করছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের এমন অমানবিক আচরণের জন্য প্রধান শিক্ষক নাজমুল হককে গ্রেফতারের দাবি করছি।’