চীনে নির্মিত উড়োজাহাজ সি৯১৯, অর্ডার পড়েছে হাজারেরও বেশি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন অব চায়না (কোমাক) তাদের সি৯১৯ মডেলের ১০০টি উড়োজাহাজের নতুন অর্ডার পেয়েছে। প্রথম সফল বাণিজ্যিক ফ্লাইটের পরই তারা এ ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
চীনের মূল উড়োজাহাজ সংস্থা এয়ার চায়নার এই অর্ডারে কোমাকের বহু বছরের ব্যবসা নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আন্তর্জাতিক মহলে উড্ডয়ন খাতে বোয়িং-এয়ারবাসের আধিপত্য অবসানের আলোচনা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
এ মাসের শুরু পর্যন্ত সি৯১৯ এর একমাত্র ক্রেতা ছিল চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স। এয়ার চায়নার সাম্প্রতিক অর্ডারের ফলে কোমাক এখন আরও বলিষ্ঠ অবস্থানে পৌঁছে গেছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
কোমাক এর আগে জানিয়েছিল, তারা এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি উড়োজাহাজের অর্ডার পেয়েছে, যার বেশিরভাগই চীন থেকে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এয়ার চায়নার কাছে উড়োজাহাজ বিক্রি নিশ্চিত করায় কোমাকের জন্য আরও ব্যবসার সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং এর ফলে বিনিয়োগকারীরাও আকৃষ্ট হতে পারে।
বেইজিং ভিত্তিক উড়োজাহাজ সংস্থা এয়ার চায়না ৬০টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যসহ মোট ১৯৬টি গন্তব্যে যাত্রী পরিবহণ করে থাকে।
অপরদিকে উড়োজাহাজের নিরাপত্তা বিষয়ে একের পর এক প্রশ্নে জর্জরিত এই খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান বোয়িং। সাম্প্রতিক কিছু দুর্ঘটনায় বোয়িংয়ের সুনাম ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।
নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ সম্প্রতি মার্কিন উড্ডয়ন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বোয়িং এর ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের উৎপাদন সম্প্রসারণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সি৯১৯ উড়োজাহাজ অনেকটাই বোয়িং এর এই মডেলের কাছাকাছি আদলে তৈরি। বিশ্লেষকদের মত, বোয়িং এর শুন্যস্থান পূরণে সফল হতে পারে চীনের প্রতিষ্ঠানটি।
অস্ট্রেলিয়ার উড্ডয়ন খাতের বিশ্লেষক হিউ রিচি বলেন, আমার মতে সি৯১৯ হচ্ছে বড় একটি উন্নয়ন, যা শুধু চীনের জন্যই নয়। সার্বিকভাবে উড্ডয়ন খাতে এই মডেলটি নতুন একটি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা করে দিয়েছে। ৭৩৭ ও বোয়িং থেকে মানুষ সরে আসতে চাইছে।
বোয়িং ক্রেতাদের জানিয়েছে, অর্ডার অনুযায়ী উড়োজাহাজ সরবরাহে দেরি হবে। প্রতিষ্ঠানটিকে এখন সব নির্মাণাধীন বা ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত উড়োজাহাজের নতুন করে নিরাপত্তা পরীক্ষা করতে হচ্ছে।
অপরদিকে এই খাতের অপর বড় প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসও সরবরাহ শৃঙ্খলের জটিলতায় ভুগছে। এসব কারণে তারা বেশ কিছু অর্ডারের ডেলিভারি বিলম্বিত করে ২০২৫ এ নিয়েছে।
সি৯১৯ এর বাণিজ্যিক ফ্লাইট মে মাসেই শুরু হয়েছে। চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের প্রথম ফ্লাইটটি সফলভাবে সাংহাই থেকে বেইজিং এ পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
এটি বোয়িং এর ৭৩৭ ও এয়ারবাসের এ৩২০ মডেলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে।
আফ্রিকা ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় চীনের ‘অংশীদাররা’ সবার আগে আন্তর্জাতিক ক্রেতা হতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।