ভারি বর্ষণের পর শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে চীনে। দেশটির গুয়াংডং প্রদেশের প্রধান নদী, জলপথ এবং জলাধারগুলো পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় প্রদেশটি ভয়াবহ বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির কারণে এ অঞ্চলের ১২ কোটি সাত লাখ মানুষকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে সরকার।
রোববার তাদের সুরক্ষায় সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা নিতে হয়েছে। এমন ভয়াবহ বন্যা প্রতি একশ বছরে মাত্র একবারই দেখা যায়। সোমবার রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে চীনের আবহাওয়ার ঘটনাগুলো তীব্র হয়ে উঠেছে।
রোববার চীনের রাষ্ট্রীয় সিসিটিভি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়ে স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিজিয়াং এবং বেইজিয়াংয়ের নদী ও উপনদীর অববাহিকার কয়েকটি অংশে পানির স্তর এমনভাবে বেড়ে গেছে যা বিরল। ৫০ বছরে যেমনটি মাত্র একবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে বলেও জানিয়েছে সিসিটিভি নিউজ।
গুয়াংডংয়ের কর্মকর্তারা স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন বিভাগ এবং পৌরসভাগুলোকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়াতে জরুরি পরিকল্পনা নিতে শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। দুর্যোগের মুখে পড়া মানুষেরা যাতে খাবার, কাপড়, পানি এবং নিরাপদ আশ্রয় পায় তা নিশ্চিত করতে দ্রুতই দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল ও অন্যান্য জিনিসের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
গুয়াংডং চীনের প্রধান রপ্তানিকেন্দ্র এবং অন্যতম বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক কেন্দ্রও। কয়েক দিন ধরে প্রদেশটিতে ভারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে চীনের অন্যান্য অঞ্চলেও। শনিবার রাতে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিপাত চলছে এখনো। এতে গুয়াংডংয়ের মধ্য ও উত্তরের বহু জায়গাসহ ঝাওকিং, শাগুয়ান, কিংগুয়ান এবং জিয়াংমেন নগরীও পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। সেসব জায়গায় মানুষকে উদ্ধারে উদ্ধারকর্মী পাঠানো হয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাতে ৬৫টির মতো ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। চীনে প্রায়ই এ ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। তবে গত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে ভয়াবহ বন্যা, খরা এবং তীব্র দাবদাহ দেখা যাচ্ছে। এবারের পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে জানিয়েছে চীনের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।