Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

এক অস্ত্রেই গোটা বিশ্বকে চোখ রাঙাচ্ছে ইরান

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪১ পিএম

এক অস্ত্রেই গোটা বিশ্বকে চোখ রাঙাচ্ছে ইরান

ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে ইসরাইলি হামলার পর হরমুজ প্রণালিতে একটি জাহাজ জব্দ করেছে ইরান। ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী বাহিনী (আইআরজিসি) জাহাজটি জব্দ করে নিজেদের জলসীমায় নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। জাহাজ জব্দের পর ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। 

তেহরান জানিয়েছে, সিরিয়ায় হামলার জবাব দেওয়া শেষ করেছে তারা। তবে ইসরাইল পাল্টা পদক্ষেপ নিলে তেহরানও চুপ করে থাকবে না। সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান। এমনকি হরমুজ প্রণালিও বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে দেশটি। যেটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সমুদ্রপথ।

মধ্যপ্রাচ্য থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় তেল রপ্তানি করা হয় হরমুজ প্রণাণির মাধ্যমে। এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল যায় এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং অন্যান্য জায়গায়। হরমুজ প্রণালির একদিকে আছে আরব দেশগুলো। এসব দেশের মধ্যে আমেরিকার মিত্র দেশগুলো রয়েছে। হরমুজ প্রণালির অন্য পাশে রয়েছে ইরান। হরমুজ প্রণালির সবচেয়ে সংকীর্ণ যে অংশ সেখানে ইরান এবং ওমানের দূরত্ব মাত্র ২১ মাইল। হরমুজ প্রণালিই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমারাদের জন্য, বলতে গেলে গুরুত্বপূর্ণ এই  সমুদ্রপথ বন্ধের হুমকি দিয়ে গোটা বিশ্বকে চোখ রাঙাচ্ছে ইরান।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার জন্য একমাত্র দায়ী নেতানিয়াহু: এরদোগান

হরমুজ প্রণালি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ
সারা বিশ্বের মোট বাণিজ্যের ৮০ শতাংশই হয় সমুদ্রপথে। ২০২১ সালে একটি জাহাজ আটকে সুয়েজ খাল ছয় দিন বন্ধ থাকায় বিশ্ব অর্থনীতি এক হাজার কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আর এই খালের চেয়ে বেশি গুরুত্ব রাখে মধ্যপ্রাচ্যের হরমুজ প্রণালি। এ প্রণালি ছাড়া পারস্য উপসাগর পাড়ি দেওয়ার কোনো পথ নেই। এ উপসাগর ঘিরেই রয়েছে সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ইরান, ইরাক আর ওমান।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে

বিশ্বব্যাপী যে পরিমাণ জ্বলানি চাহিদা রয়েছে তার ১৫ শতাংশই মিটিয়ে থাকে উপসাগরীয় এসব দেশ। আর প্রতিদিন যে পরিমাণ জ্বালানি রপ্তানি হয় তার এক-পঞ্চমাংশ তথা ২ কোটি ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি হয় এ পথে। বলা হয়ে থাকে, উপসাগরীয় অঞ্চলে পৃথিবীর মোট জীবাশ্ম জ্বালানির প্রায় অর্ধেক সঞ্চিত আছে। পারস্য উপসাগরের নিচে এবং উপসাগরীয় এসব দেশে পৃথিবীর মোট প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশ জমা।

এসব জীবাশ্ম জ্বালানি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করতে পাড়ি দিতে হয় হরমুজ প্রণালি। আর এ প্রণালি হয়েই এসব জ্বালানি মধ্যপ্রাচ্য থেকে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকাসহ অন্যান্য অঞ্চলে পৌঁছায়। ফলে এ প্রণালি যদি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তবে থমকে যাবে বৈশ্বিক অর্থনীতির চাকা। পারস্য উপসাগরের জ্বালানি ছাড়া বহু দেশের অর্থনীতিই হোঁচট খাবে। চীনের ৪৫ শতাংশ জীবাশ্ম জ্বালানি আসে হরমুজ প্রণালি হয়ে, জাপানের ক্ষেত্রে এটি ৪৮ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রে এটি ৩০ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে একমাত্র ইরান বাদে উপসাগরীয় প্রতিটি দেশই আমেরিকার দাসে পরিণত হয়েছে। তাই কোনোভাবেই তেহরানের হাতে এ প্রণালির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ দিতে চায় না ওয়াশিংটন। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ এ নৌপথ রক্ষায় উপসাগরজুড়ে গড়েছে অসংখ্য সামরিকঘাঁটি ও স্থাপন করেছে পঞ্চম নৌবহর। মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকাকে ঠেকাতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে ইরান। এমনকি মজুত রেখেছে বিপুল পরিমাণ জলমাইন।

আরও পড়ুন: ইসরাইল-ইরান উত্তেজনা, যে সতর্কবার্তা দিল চীন

যাতে কোনো সংঘাত হলে মুহূর্তেই বন্ধ করে দেওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ এ হরমুজ প্রণালি। ইরান জানায়, পশ্চিমা অবরোধের কারণে ইরান যদি তেল বিক্রি করতে না পারে, তবে কোনো উপসাগরীয় দেশই তা করতে পারবে না। হয়তো এমন হুমকির কারণেই ইরানকে খুব বেশি ক্ষেপাতে চায় না আমেরিকা। 

সূত্র: বিবিসি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম