মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার শিকার হওয়া ইসরাইলকে সংযত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরিই জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে’ অংশ নেবে না। এ অবস্থায় বাড়তে থাকা উদ্বেগের মধ্যে ইসরাইলি মন্ত্রী বেনি গান্তজ বলেছেন, তার দেশ সঠিক সময়ে ইরানের কাছ থেকে ‘সঠিক মূল্য উসুল’ করবে।
গত শনিবার রাতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এ মাসের প্রথম দিন সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ পর্যায়ের দুইজন জেনারেলসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার জেরে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তেহরান ইসরাইলে এ হামলা চালিয়েছে।
যদিও ইসরাইল সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে তারাই যে ওই হামলা চালিয়েছে সেটা ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়।
শনিবার রাতে ইরানের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশ ইসরাইলের ভূখণ্ডে পৌঁছার আগেই ধ্বংস করা হয়। যদিও এ হামলায় ছোট্ট একটি মেয়ে গুরুতর আহত হয়েছে এবং দুই চিরশত্রু দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডানসহ মিত্র দেশগুলো ইসরাইলকে তাদের প্রতিরক্ষায় সহায়তা করেছে।
হামলার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র মিত্র ইসরাইলের পাশে ‘দৃঢ়ভাবে অবস্থানের প্রতিশ্রুতিতে অটল’ থাকার কথা বলেছে। তবে সঙ্গে এটাও বলেছে, তারা ইরানের এ হামলার জবাব দিতে গ্রহণ করা ইসরাইলি পদক্ষেপে অংশ নেবে না এবং তারা প্রতিশোধমূলক কোনো হামলায় ‘সমর্থন দেবে না’।
ইসরাইল সফলভাবে নিজেদের প্রতিরক্ষা করতে পেয়েছে এবং এটাই ইরানের বিরুদ্ধে তাদের জয় বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির একজন শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তার দেশের এখন উচিত হবে ‘খুব সাবধানে’ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কখন প্রতিশোধ নেওয়া হবে সেটাই একমাত্র বড় প্রশ্ন নয়। বরং ইসরাইল কোন পদক্ষেপ বেছে নেবে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। এটা এখন তাদের সিদ্ধান্ত।
ইরানের হামলার পর ইসরাইলের পাঁচ সদস্যের যুদ্ধ মন্ত্রিসভা, যাদের মধ্যে গান্তজও রয়েছে, রোববার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে বৈঠকে কী ধরনের এবং কখন প্রতিক্রিয়া জানানো হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এদিকে ইরান রোববার হুঁশিয়ার করে বলেছে, যদি ইসরাইলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর প্রতিশোধমূলক কোনো পাল্টা হামলা করে। তবে তাদের ‘আরও বড় জবাব’ দেওয়া হবে। আর ইসরাইল জানায়, অভিযান এখনো শেষ হয়নি।