ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা হামলার ‘প্রস্তুতি’, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আতঙ্ক
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের যেকোনো স্থানে হামলা চালাতে সক্ষম
সম্প্রতি সিরিয়ায় থাকা ইরানের কনস্যুলেট অফিসে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনার পর ইসরাইলের বিরুদ্ধে চরম প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান। আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা ও গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইতোমধ্যে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে ইরান। যেকোনো সময় মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো জায়গায় ইসরাইলি স্বার্থে আঘাত হানতে পারে ইরান। এ নিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পাশাপাশি আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে ইরানের রাজধানী তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিতের সময় বাড়িয়েছে জার্মান বেসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থা লুফথানসা। সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে ইসরাইলি হামলার পাল্টায় ইরান হামলা চালাতে পারে—এমন শঙ্কা থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে লুফথানসা।
ইরানের একটি বার্তা সংস্থা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানায়, সামরিক মহড়ার জন্য তেহরানের আকাশসীমা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু পরে ওই বার্তা সরিয়ে সংস্থাটি বলেছে, এমন কোনো খবর তারা প্রকাশ করেনি।
ইরানের পাল্টা হামলার শঙ্কায় ১ এপ্রিল থেকে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। ওই দিন সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে ইসরাইলের জঙ্গিবিমান থেকে বোমা ফেলা হয়।
লুফথানসা বৃহস্পতিবার বলেছে, ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত তেহরানের সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে তারা। এর মধ্য দিয়ে ফ্লাইট স্থগিতের সময় দুই দিন বাড়িয়েছে তারা। লুফথানসার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, উড়োজাহাজের ক্রুদের যাতে তেহরানে রাত যাপনের জন্য অবতরণ করতে না হয়, সে জন্য গেল সপ্তাহান্ত থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে তেহরানে ফ্লাইট না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
পশ্চিমা বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে শুধু লুফথানসা ও এর সহযোগী বিমান পরিবহণ সংস্থা অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্সই তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনা করে। টার্কিশ এয়ারলাইন্স ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিমান পরিবহণ সংস্থাগুলোই সাধারণত সেখানে যাত্রী পরিবহণ করে।
লুফথানসার মালিকানাধীন অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্স সপ্তাহে ছয়বার ভিয়েনা থেকে তেহরানে যাত্রী পরিবহণ করে। সংস্থাটি বলেছে, তারা এখনো বৃহস্পতিবার তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। তবে রাতে তেহরানে অবস্থান এড়ানোর চেষ্টা করছে।
তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনা করা অন্যান্য বিমান পরিবহণ সংস্থার বক্তব্য জানা যায়নি। এমিরেটস ও কাতার এয়ারওয়েজের উত্তর আমেরিকার ফ্লাইটের জন্যও ইরানের আকাশসীমা গুরুত্বপূর্ণ।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরাইলকে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে। আর তা হবে তাদের হামলার জন্য, যে হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সাতজন সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আইআরজিসির বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী ইউনিট কুদস ফোর্সের একজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রয়েছেন।
ইসরাইল ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইরান–সমর্থিত হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে হামলা চালিয়ে আসছে। দেশটি দামেস্কে ইরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, ইসরাইল ওই হামলা চালিয়েছে।