নির্বাচনে নিজ দলের ভরাডুবি, নতুন কৌশলে হাঁটার ইঙ্গিত এরদোগানের

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৯ এএম

ফাইল ছবি
তুরস্কের ঐতিহাসিক নগরী ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন একরেম ইমামোগুলু। এতেই বুঝা যায়, বিরোধীদের উত্থানটা বেশ চমকপ্রদ হয়েছে। ইমামোগুলুকে এরদোগানের ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছেন অনেকে। এই অবস্থায় নিজ দলের মধ্যে পরিবর্তন আনার প্রতিজ্ঞা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান।
তিনি বলেছেন, যেসব ভুল তার দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে পরাজয়ের দিকে নিয়ে গেছে সেগুলো তিনি সংশোধন করবেন।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের ৮২টি অঞ্চলের মধ্যে এরদোগানের একে পার্টি জিতেছে মাত্র ২৪টি অঞ্চলে। বাকি অঞ্চলগুলোর বেশির ভাগই গেছে এরদোগান বিরোধী শিবিরে। যদিও প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্ট বা সিএইচপি পেয়েছে ৩৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট। আর এরদোগানের একে পার্টি পেয়েছে ৩৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ ভোট।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের নির্বাচনে বিরোধীরা মূলত তুরস্কের অর্থনৈতিক দুর্দশা ও ইসলামপন্থীদের পৃথক হিসেবে প্রদর্শন করে তুর্কিদের বড় একটি অংশের ভোট জিতে নিয়েছে। এই অবস্থায় এরদোগানের সংবিধান সংশোধনের যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়িত নাও হতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রোববারে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া স্থানীয় নির্বাচনের হার এরদোগানের ২০ বছরের ক্ষমতায় থাকার সময়ে সবচেয়ে বড় পরাজয়। এই নির্বাচন বিরোধীদের শক্তিশালী করার পাশাপাশি ইস্তাম্বুলের নবনির্বাচিত মেয়র একরেম ইমামোগুলুকে এরদোগানের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে হাজির করেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, তুরস্কে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং প্রায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি মূল্যস্ফীতির কারণে ভোটারেরা তার দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
এই অবস্থায় তুরস্কের সংবিধান সংশোধনে এরদোগানের যে পরিকল্পনা তা ভেস্তে দিতে পারে। এরদোগান মূলত ২০২৮ সালের পরও তার ক্ষমতায় থাকা নির্বিঘ্ন করতেই এই সংশোধনী আনতে চান। যদিও পার্লামেন্টে এরদোয়ান ও তার মিত্রদের প্রাধান্য আছে তবে স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধীদের উত্থান সংবিধান সংশোধনীর বিষয়টিকে অবশ্যই চাপে ফেলবে। বিশেষ করে, যদি সংবিধান সংশোধনের জন্য গণভোটের আয়োজন করতে হয় সে ক্ষেত্রে এরদোয়ানের মনোবাঞ্ছা পূরণ নাও হতে পারে।
সম্ভবত, এই নির্বাচনে হারের পর এরদোগান ভোটারদের আস্থায় নিতেই কৌশল বদলানোর ইঙ্গিত দিচ্ছেন। আর তাই সোমবার আঙ্কারায় একে পার্টির প্রধান কার্যালয়ে এরদোয়ান বলেছেন, এটি আমাদের যাত্রার শেষ নয় বরং এটি আমাদের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট।
এরদোগান বলেন, আমরা যদি কোনো ভুল করে থাকিই, তা আমরা ঠিক করে নেব। তবে এরদোগান ঠিক কী সংশোধন করতে চান সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি।