প্রতি বছর নতুন চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে একেক দেশে একেক দিন রোজা শুরু হয়। শুধু দিনেরই তারতম্য হয় না, রোজাদাররা কত ঘণ্টা রোজা রাখবেন পার্থক্য হয় সেই সময়েরও।
রোজা রাখার সময় কতক্ষণ হবে সেটি পুরোপুরি নির্ভর করে একজন রোজাদার বিশ্বের কোন অংশে আছেন তার ওপর। এবার সব থেকে বড় রোজা হবে বিশ্বের উত্তরের দেশগুলোতে। চলতি বছর আইসল্যান্ড বা গ্রিনল্যান্ডের মতো বিশ্বের উত্তরের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী মুসলিমরা ১৭ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রোজা রাখবেন। বিশ্বব্যাপী অঞ্চলভেদে রোজা রাখার সময় সাধারণত ১২ থেকে ১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আলজাজিরা।
অন্যদিকে চিলি অথবা নিউজিল্যান্ডের মতো বিশ্বের দক্ষিণ অংশের দেশগুলোতে বসবাসকারী মুসলমানরা রোজা রাখবেন প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে বসবাসকারী মুসলিমদের জন্য এ বছর রোজা রাখার সময় কিছুটা কম হবে। ২০৩১ সাল পর্যন্ত এই সময় কমতে থাকবে। এরপর আবার ধীরে ধীরে তাদের রোজা রাখার সময় বাড়বে। এমন একসময় আসবে, যখন বছরের সবচেয়ে বড় দিনে রোজা রাখবেন তারা।
এদিকে পৃথিবীর নিরক্ষরেখার দক্ষিণে বসবাসকারী রোজাদার মুসলমানদের ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র দেখা যাবে। মোটামুটি একই দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত শহরগুলোতে ইফতারের সময় একই থাকে। একজন মুসলিমকে ফজরের আজানের সময় থেকে মাগরিবের আজান পর্যন্ত দিনব্যাপী রোজা রাখতে হয়। আল্লাহর ভয় ও তার নৈকট্য অর্জনের জন্য এই সময় খাবার ও পানীয় গ্রহণ, ধূমপান ও শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হয়।
কোন দেশে কত ঘণ্টা রোজা
ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি, নরওয়ের অসলো, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো, জার্মানির বার্লিন, আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন, রাশিয়ার মস্কো, নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম, পোল্যান্ডের ওয়ারশ, কাজাখস্তানের আস্তানায় এবার ১৫ ঘণ্টা রোজা হবে। বেলজিয়ামের ব্রাসেলস, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ, সুইডেনের স্টকহোম, রামানিয়ার বুখারেস্ট, লগেরিয়ার সোফিয়া, ইতালির রোম, স্পেনের মাদ্রিদ, ফ্রান্সের প্যারিস, পর্তুগালের লিসবন, তুরস্কের আঙ্কারা, কানাডার অটোয়া, জাপানের টোকিও, চীনের বেইজিং, গ্রিসের এথেন্স, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কসহ ওয়াশিংটন ডিসি ও লস অ্যাঞ্জেলেস, তিউনিসিয়ার তিউনিস, আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স, ইরানের তেহরান, আফগানিস্তানের কাবুল, ভারতের নয়াদিলি, বাংলাদেশের ঢাকা, মরক্কোর রাবাত, সিরিয়ার দামেস্ক, পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, ইরাকের বাগদাদ, লেবাননের বৈরুত, জর্ডানের আম্মান, ফিলিস্তিনের গাজা এবং মিসরের কায়রোতে ১৪ ঘণ্টা রোজা হবে। অন্যদিকে ১৩ ঘণ্টার তালিকায় আছে কাতারের দোহা, আরব আমিরাতের দুবাই, সুদানের খার্তুম, সৌদি আরবের রিয়াদ, নাইজেরিয়ার আবুজা, ইয়েমেনের এডেন, সেনেগালের ডাকার, ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবা, আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেস, শ্রীলংকার কলম্বো, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর, সোমালিয়ার মোগাদিসু, কেনিয়ার নাইরোবি, জিম্বাবুয়ের হারারে, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, অ্যাঙ্গোলার লুয়ান্ডা, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ, উরুগুয়ের মন্টেভিডিও, অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা, চিলির পুয়ের্তো মন্টে এবং নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ।
প্রতি বছর ভিন্ন ভিন্ন তারিখে কেন রোজা শুরু হয়?
প্রতি বছর রমজান মাস পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ১০ থেকে ১২ দিন এগিয়ে আসে। কারণ হিজরি চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী ইসলামি ক্যালেন্ডারে মাসের হিসাব করা হয়। যেহেতু চান্দ্র বছর সৌর বছরের চেয়ে ১১ দিন ছোট এজন্য প্রতি বছর আরবি ক্যালেন্ডারের দিন এগিয়ে আসে।