বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমবাগান নাকি আম্বানিদেরই! গুজরাটে ৬০০ একরজুড়ে আম্বানিদের আমবাগান। যেখানে রয়েছে দেশি-বিদেশি দেড় লাখ আমগাছ। খাবারের ব্যাপারে আম্বানি পরিবারের বিশেষত্বের অংশ হিসেবেই তাদের রয়েছে মুকেশ আম্বানির পছন্দের ফল নিজস্ব আমবাগান। মুকেশ আম্বানির বাবা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা ধিরুভাই আম্বানির নাম অনুযায়ী এ আমবাগানের নাম রাখা হয় ‘ধীরুভাই আম্বানি’।
মুকেশ আম্বানির বাগানে চাষ করা আম বিশ্বের সেরা জাতগুলোর মধ্যে অন্যতম। লখিবাগ আমরাই বাগানে প্রায় ২০০টিরও বেশি জাতের আমগাছ রয়েছে। সেখানে পাবেন আম্রপালি, নীলম, রত্না, আলফানসো কেশর, সিন্ধু দেশি জাতের পাশাপাশি বিদেশি জাতের আম; যেমন- ফ্লোডিলার, টমি অ্যাটকিনস কেন্ট, কেট, ইসরাইলের লিলি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মায়া।
বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় আম রপ্তানিকারক সংস্থা হয়ে উঠেছে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। এ বাগানে আম চাষের ধরন এক্কেবারে আলাদা। বাগানের শীর্ষ দায়িত্বে রয়েছেন মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি।
জ্বালানি, পেট্রোকেমিক্যাল, টেক্সটাইল, প্রাকৃতিক সম্পদ, খুচরো ও টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে ভারতজুড়ে ব্যবসার জাল রয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের; কিন্তু এখন রিলায়েন্স বিশ্বের অন্যতম আম রপ্তানিকারকেও পরিণত হতে চলেছে।
রিলায়েন্সের আম খুবই জনপ্রিয় ভারতের বাজারে। বাজারে আম্বানিদের আমের ‘আরআইএল’ ট্যাগ লাগানো থাকে। আমের পাশাপাশি এ বাগানে পেয়ারা, তেঁতুল, কাজু, ব্রাজিলিয়ান চেরি, পিচ, ডালিম ও কিছু ঔষধি গাছও চাষ করা হয়ে থাকে। রিলায়েন্সের পক্ষ থেকে আমকে বাজারজাত করার জন্য গঠন করা হয়েছে জামনগর ফার্মস প্রাইভেট লিমিটেড।
কথিত আছে, রিলায়েন্স আনন্দে নয় বরং বাধ্য হয়েই আমবাগান করেছে। আসলে গুজরাটের জামনগরের রিলায়েন্সের একটি শোধনাগার রয়েছে। যেটি বিশ্বের বৃহত্তম শোধনাগারগুলোর একটি। দূষণ রুখতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে একাধিকবার এই সংস্থাকে নোটিশ পাঠানো হয়। ফলে একপ্রকার চাপে পড়েই পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি শোধনাগারের বর্জ্য কাজে লাগিয়ে আমবাগান করে লাভের কথা ভাবে রিলায়েন্স।
জামনগর রিফাইনারির কাছে অনুর্বর জমিতে আমগাছ লাগানোর কাজ শুরু হয়। জমিটি আম চাষের জন্য উপযুক্ত না হলেও নানা প্রযুক্তির সাহায্যে তা ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে। বর্তমানে এই বাগানে উৎপাদিত আম বিশ্বের বহু দেশে রপ্তানি করা হয়। রিলায়েন্স তার বাগানে ব্যবহৃত প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষকদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এবং প্রতি বছর কৃষকদের মধ্যে প্রায় এক লাখ গাছ বিতরণ করে।
বাগানের জল আসে রিলায়েন্স কোম্পানির প্ল্যান্ট থেকে। প্ল্যান্টে বিশেষ উপায়ে শোধন করে নেওয়া হয় সাগরের জল। আম্বানির বাগানে উৎপাদিত আমের চাহিদা এনআরআই গুজরাটিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
শোনা যায়, মুকেশ আম্বানির এই বাগানের জুড়ি নেই গোটা দুনিয়ায়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমবাগান নাকি আম্বানিদেরই। আবার কেউ কেউ বলেন- এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় আমবাগান। তবে কোনো দাবির পক্ষেই নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিশ্বে সর্ববৃহৎ না হলেও আমবাগানটি নেহাত ছোট বা মাঝারি নয়।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইকোনমিক টাইমস