গাজাবাসীর অনুপ্রেরণায় ইসলাম গ্রহণ করলেন মার্কিন লেখক শন কিং
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনে ইসলাম গ্রহণ করেছেন মার্কিন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট শন কিং ও তার স্ত্রী। সোমবার আরব দেশগুলোতে রমজান মাসের প্রথম দিন সস্ত্রীক ইসলামে প্রবেশের ঘোষণা দেন তিনি।
শন কিং ও তার স্ত্রীর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সময়কার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে- একজন ইমাম কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করিয়ে তাদের ইসলামে দীক্ষিত করছেন।
কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করার পর শন বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি ও তার স্ত্রী।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার ইনস্টাগ্রামের লাইভে তারা কালেমা পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাদের কালেমা পাঠ করিয়েছেন শনের ১০ বছরের পুরনো বন্ধু ও মার্কিন মুসলিম স্কলার ওমার সুলেমানি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টের ক্যাপশনে শন কিং লিখেছেন, ‘মাত্রই টেক্সাসের ডালাসে অবস্থিত আমাদের বাসভবনের পার্শ্ববর্তী মসজিদ থেকে ফিরলাম। সেখানে কয়েকজনের উপস্থিতিতে আমরা শাহাদাহ পাঠ করেছি এবং রমজান শুরুর দিকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘এই দিনটি খুব সুন্দর ও শক্তিশালী ছিল। আর আমাদের জীবনের জন্য ছিল খুবই অর্থবহ। আমরা কখনো কিছুতেই দিনটি ভুলতে পারব না।’
৪৪ বছর বয়সী শন ফিলিস্তিনের গাজাবাসীকে উদ্দেশ করে বলেন, তার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে ‘গাজাবাসীর পোহানো গত ৬ মাসের দুর্ভোগ ও যন্ত্রণা’ রয়েছে। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনিদের তৈরি কেফিয়াহ রুমাল পরা ছিলেন।
শন বলেন, ‘এটি আমার হৃদয়কে আরও গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে যে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর ও ট্রমাটিক জায়গা, যেখানে শুধু ধ্বংসস্তূপ আর বেঁচে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা ছাড়া প্রায় কিছুই নেই, সেখানে থেকেও মানুষ কীভাবে জীবনের অর্থ ও লক্ষ্য খুঁজে পায়।’
গাজার চলমান ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘গাজার প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে আমার হৃদয় জড়িয়ে আছে। আমি অত্যন্ত গর্ব বোধ করছি যে- দক্ষিণ ও উত্তর গাজার হাজার হাজার পরিবারের জন্য রাতের খাবারের (ইফতার-সেহরি) ব্যবস্থা করতে পারছি। অবশ্যই এটি রমজানের প্রতিটি দিনই চালু রাখব।’
শন আরও বলেন, ‘ইসলামের প্রতি তাদের বিশ্বাস ও আন্তরিকতা শুধু আমারই নয়, বরং বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের হৃদয়কেই প্রশস্ত করেছে।’
শন কিং একজন মার্কিন লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি ফিলিস্তিন ইস্যুতে গাজাবাসীর পক্ষে খুব সোচ্চার। গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া গাজার ওপর ইসরাইলের পৈচাশিক হামলার নিন্দা জানিয়ে অনবরত পোস্ট করে আসছেন তিনি।
পাশাপাশি মার্কিন এই লেখক শুরু থেকেই ইসরাইলের এই গণহত্যা বন্ধ ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে আসছেন।
ঘৃণামূলক অপরাধের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কারণে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন শন। এর মধ্যে অন্যতম ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার মুভমেন্ট’।
তিনি নাগরিক ও মানবাধিকার, জাতিগত সম্পর্ক, পুলিশি বর্বরতা, নির্বিচারে ধরপাকড় এবং আইন প্রয়োগকারীদের অসদাচরণের মতো বিষয়ে লেখালেখির মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছিলেন।
এছাড়াও, শন দৈনিক কস, নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজ এবং দ্য ইয়াং তুর্কসের মতো মিডিয়া আউটলেটগুলোতে নিয়মিত লিখতেন।