ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্লাইমেট সার্ভিস গতমাসকে আধুনিক বিশ্বের উষ্ণতম ফেব্রুয়ারি বলে বর্ণনা করেছে। এ নিয়ে টানা নবম মাস উষ্ণতার নতুন রেকর্ড গড়লো।
বিবিসি জানায়, ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে এ বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিটি মাসই আধুনিক বিশ্বে সবচেয়ে উষ্ণতম হওয়ার রেকর্ড গড়েছে।
এছাড়াও বিশ্বের সমুদ্রপৃষ্ঠও উষ্ণতার নতুন রেকর্ড গড়েছে। সেই সঙ্গে অ্যান্টার্কটিক সাগরের বরফের পরিমাণ আবারো ভয়াবহ পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এখনো এল নিনো সক্রিয় থাকায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে। তবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হওয়ার মূল কারণ মনুষ্যসৃষ্টি।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিব অধ্যাপক সেলেস্তে সাওলো বলেন, এজন্য দ্ব্যর্থহীনভাবে দায়ী তাপামাত্রা ধরে রাখা গ্রিনহাউজ গ্যাস।
কার্বন ডাইঅক্সাইডের মত গ্রিনহাউজ গ্যাসের প্রভাবে প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের তাপমাত্রা ১ দশমিক ৭৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
এর আগের রেকর্ডটি হয়েছিল ২০১৬ সালে। সেবার তাপমাত্রা প্রায় শূন্য দশমিক ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মত বেশি ছিল।
এ অতিরিক্ত উষ্ণ আবহাওয়া মূলত সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে। ওই সব অঞ্চলে তীব্র তাপদাহ দেখা গেছে।
ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ১২ মাসের গড় হিসেবে এখন বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। এই প্রথম এক বছরের হিসেবে বৈশ্বিক তাপমাত্রার গড় বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে ছাড়িয়ে গেল।
২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু বিষয়ে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে বলা হয়েছিল, চুক্তিতে সই করা দেশগুলো গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে এনে বৈশ্বিক তাপমাত্রার গড় বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার লড়াই করে যাবে। যাতে বিশ্বকে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। প্রায় ২০০ দেশ ওই চুক্তিতে সই করে। যেটি ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’ নামে পরিচিত।
চুক্তিতে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে বলা হয়েছিল। তাই কার্যত সেই চুক্তি এখনো লঙ্ঘন হয়নি।
তবে টানা কয়েক মাস ধরে যেভাবে উষ্ণ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হচ্ছে তাতে তেমনটি ঘটতে খুব বেশি দেরি নেই।