গাজায় ইসরাইলি হামলা শতাব্দীর অন্যতম ‘নিকৃষ্ট বর্বরতা’: এরদোগান
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৪, ১১:০৬ এএম
মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জার পাশাপাশি হামলা হচ্ছে হাসপাতালেও। এর ফলে গাজায় চরম মানবিক সংকট বিরাজ করছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং বিশ্বনেতারা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করে আসছেন। কিন্তু কিছু দেশের সমর্থনের কারণে ইসরাইল সব আহ্বানকে উপেক্ষা করছে। এমনকি ত্রাণ নিতে যাওয়া মানুষকেও বোমাবর্ষণ করে হত্যা করছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এমন পরিস্থিতি তৈরির জন্য ইসরাইলের কঠোর নিন্দা করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। গাজায় ইসরাইলি হামলাকে তিনি শতাব্দীর অন্যতম ‘নিকৃষ্ট বর্বরতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
নেতানিয়াহু সরকার ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্লজ্জ গণহত্যা’ চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তুর্কি নেতা। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান মঙ্গলবার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের চলমান ‘বর্বরতার’ বিরুদ্ধে আবারও নিন্দা জানিয়েছেন।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৫১ দিন ধরে আমরা গত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় বর্বরতার সাক্ষী হয়েছি।
‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নির্লজ্জ গণহত্যা’ চালানোর জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে অভিযুক্ত করে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর এই বর্বরতা ‘পশ্চিমা শক্তির সীমাহীন সমর্থনে’ ঘটছে।
তুর্কি নেতা জোর দিয়ে বলেন, ‘নেতানিয়াহু এবং হত্যাকাণ্ডে তার সহযোগীদের অবশ্যই আইন ও জনসাধারণের বিবেকের সামনে প্রতি ফোঁটা রক্তের জন্য জবাবদিহি করা হবে।’
তিনি অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেন। এরদোগান বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের মালিকানাধীন জমি দখল করে আছে তারা, আর এটি সংকট সমাধানের সবচেয়ে বড় বাধাগুলোর মধ্যে একটি।’
অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে মুসলমানদের প্রবেশাধিকার সীমিত করতে কট্টরপন্থি ইসরাইলি রাজনীতিবিদদের করা ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ দাবির নিন্দা করে প্রেসিডেন্ট এরদোগান সকল ধর্মের ধর্মীয় স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকার বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
অপরদিকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সিকে (ইউএনআরডব্লিউএ) অসম্মান করার জন্য ইসরাইলের প্রচেষ্টাকেও তিরস্কার করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘মিথ্যা তথ্য ও অপবাদ’ দিয়ে সংস্থাটিকে অসম্মান করার যে প্রচেষ্টা তেল আবিব চালাচ্ছে তাকে বিশ্বাস করা উচিত নয়। একইসঙ্গে এই সংস্থার অস্তিত্বকেও খর্ব করা উচিত নয়।’
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সাথে সন্দেহজনক সংশ্লিষ্টতার কারণে ইউএনআরডব্লিউএর তহবিল স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি এবং কানাডাসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এছাড়া গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংস্থাটি তার বেশ কয়েকজন কর্মীকেও বরখাস্ত করার ঘোষণা দিয়েছে।
ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয়ে তুর্কি নেতা বলেন, স্থায়ী শান্তির একমাত্র পথ হলো ১৯৬৭ সালের সীমানার মধ্যে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।