ইরানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ও বিশেষজ্ঞ পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। সারা দেশে ৫৯ হাজার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এবারের নির্বাচনে ইরানের সাড়ে ৮ কোটি মানুষের মধ্যে ছয় কোটি ১০ লাখ বৈধ ভোটার। বুথ-ফেরত জরিপের হাওয়া বলছে, ভোটার উপস্থিতি কম হলেও রক্ষণশীলরা তাদের ক্ষমতাকে আরও দৃঢ় করবেন। এএফপি, তেহরান টাইমস।
ইরানের সংসদ চার বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচনে ২৯০টি সংসদীয় আসনের বিপরীতে ১৫ হাজার ২০০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে প্রায় শতকরা ১৩ ভাগ নারী প্রার্থী রয়েছেন। জাতীয় সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য পাঁচটি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি এদিন ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যরা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেন। এ পরিষদের ৮৮টি আসনের বিপরীতে ১৪৪ জন আলেম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সারা দেশে এক লাখ ৯০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশের মুখপাত্র ব্রিগেড জেনারেল সাঈদ মোন্তাজের আল-মাহদি।
একই সূত্রে জানা গেছে, এদিন সর্বপ্রথম ভোট দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তেহরানের মধ্যাঞ্চলীয় খামেনি হুসাইনিয়া ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন তিনি। ভোট প্রদান শেষে ভোটারদের উদ্দেশে খামেনি বলেন, ‘ভোট দিন। সব জায়গা থেকে আমাদের দেশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। বন্ধুদের (ইরানের) খুশি করুন এবং অমঙ্গল কামনাকারীদের হতাশ করে দিন।’
এর আগে খামেনি বলেছিলেন, নির্বাচনে মানুষ অংশ নিচ্ছে কি না, সেদিকে ইরানের শত্রু দেশগুলো তাকিয়ে আছে।
তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলসহ বেশির ভাগ ইউরোপীয় দেশ, ইহুদিবাদী, পুঁজিবাদী ও বড় বড় প্রতিষ্ঠান ইরানের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। ইরানের জনসংখ্যা ৮ কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ এবার ভোট দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পরিচালিত এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষের এ নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ নেই। দেশটিতে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৪২ দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর দেশটিতে সবচেয়ে কম ভোট পড়ার ঘটনা ছিল এটি।