পাকিস্তানে নির্বাচন নিয়ে বোমা ফাটানো সেই কর্মকর্তা ‘আটক’
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
লিয়াকত আলী চাতা
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে নির্বাচনের পর থেকেই একের পর এক দৃশ্যের অবতারণা হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। আরও কয়েকটি দল একই অভিযোগ করে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে বোমা ফাটান রাওয়ালপিন্ডি ডিভিশনের কমিশনার লিয়াকত আলী চাতা। রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে কারচুপির কথা প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গে নিজের দায়ও স্বীকার করে নেন এ কর্মকর্তা।
এবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে যে, নির্বাচনে কারচুপির সঙ্গে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করার পর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি।
রোববার ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন চাতা। পরে তার অফিসে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রশাসন রেকর্ড জালিয়াতি ঠেকাতে অফিসটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই কমিশনারকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সামগ্রী ও তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষিত করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলী চাতা তার পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে দাবি করে তিনি তার পদ থেকে ইস্তফা দেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে লিয়াকত আলী বলেন, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি হয়েছে ও তিনি নিজেও এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শুধু অনিয়ম ও ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হওয়াকে তিনি নিতান্তই কম বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, নির্বাচনে অনেক বড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন যারা ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন এবং তাদের আমরা জাল ভোট দিয়ে হারিয়ে দিয়েছি। আবার এমন অনেকে আছেন যারা হেরে যেতেন; কিন্তু তাদের আমরা ভোট জালিয়াতি করে জিতিয়ে দিয়েছি।
পাকিস্তানে ভোট গ্রহণ শেষ হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে সময় লাগে তিন দিন। কিন্তু এতে দেখা যায়, এককভাবে সরকার গঠনের জন্য কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমনকি নির্বাচন পরবর্তী জোট গঠন নিয়েও জটিল পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। কোনো দলই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না।
তাছাড়া বড় ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে এখনও বিক্ষোভ করছে ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ তথা পিটিআই। দলটির দাবি তাদের সমর্থিত প্রার্থীরা ১৫০টির বেশি আসনে জয় পেলেও তা কারচুপি করে ৯২টি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে জোট গঠন করে কারা দেশটিতে নতুন সরকার গঠন করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।