পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে ভারত?
ডয়চে ভেলে
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:২২ পিএম
আগামীকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন। নানা কারণে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। আবার নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কও রয়েছে। অর্থাৎ রাজনীতির মাঠে নানা বিতর্কিত দৃশ্যপট, আদালতের লড়াই এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা- ইত্যাদি অভিযোগ ও বিশৃঙ্খলার মধ্যেই দেশটিতে হতে যাচ্ছে নির্বাচন। তবে পাকিস্তানের নির্বাচনে সব সময়ই ভারতের সাথে দেশটির সম্পর্কের প্রশ্নটি বড় আকারে দেখা দেয়।
এবারের নির্বাচনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান এবং বিলাওয়াল ভুট্টো। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসছে-চিরবৈরি প্রতিবেশী ভারত কাকে সমর্থন দিচ্ছে।
পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সাবেক আইএফএস, আইপিএস ও সেনা অফিসাররা জানিয়েছেন, ভারতের কাছে আসল বিষয় হলো, পাকিস্তানে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ করছে কিনা।
ভারতের সাবেক আইপিএস অফিসার শান্তনু মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ভারত তার খুবই কাছের প্রতিবেশী দেশের নির্বাচনের গতিপ্রকৃতির ওপর নজর রাখছে। যে সরকারই আসুক না কেন, ভারত দেখবে তার স্থায়িত্ব কতটা এবং ভারতের নিরাপত্তার ওপর তার কতটা প্রভাব পড়বে। ভারত কখনই চায় না, নিরাপত্তা নিয়ে তাদের চিন্তাটা বেড়ে যায়।
তিনি জানিয়েছেন, ভারত নিরপেক্ষভাবে পাকিস্তানের নির্বাচনের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখছে। এটা পাকিস্তানের নির্বাচন। সে দেশের মানুষ ভোট দেবে। ভারতের একটাই চিন্তা, তা হলো, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে। সেখানে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে, সেটাই দেখা হবে।
পাকিস্তানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়া বার্তাসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে কী হবে তা এখনই বলে দেওয়া যায়। পাকিস্তানের সেনা আগে থেকে ঠিক করে রেখেছে কাকে তারা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে চায় এবং সম্ভবত সেই মানুষটি হলেন নওয়াজ শরীফ। তাই ৮ ফেব্রুয়ারি যা হবে, তা ইলেকশন না বলে সিলেকশন বা বাছাই করে নেয়া বলাটাই ভালো।
বিসারিয়া বলেছেন, পাকিস্তানের মধ্যে থেকে যে রিপোর্ট আসছে, তাতে বলা হচ্ছে, সেনাবাহিনী সেখানে প্রাক নির্বাচনী কাজকর্ম করছে, নির্বাচনের পরেও করবে। তারা এমন সরকার চায়, যা সেনার কথায় চলবে। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা নওয়াজ শরীফকেই চায়। ইমরানকে এবার চায় না বলে তাকে বাইরে রাখার সব চেষ্টা হয়েছে। সেনা এমন জোট চায় যা তারা নিয়ন্ত্রণ করবে।
আরও পড়ুন>> জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকলেও যে কারণে হারবে ইমরান খানের দল
অজয় বিসারিয়ার সঙ্গে একমত ভারতীয় সেনার সাবেক লেফটন্য়ান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, একটা চালু কথা আছে, আমাদের দেশে একটা সেনাবাহিনী আছে। আর পাকিস্তানের ক্ষেত্রে বলা হয়, সেখানে সেনাবাহিনীর একটা দেশ আছে।
উৎপল ভট্টাচার্য মনে করেন, পাকিস্তানের সঙ্গে টু চ্যানেল ডিপ্লোমেসি চালাতে হবে। নওয়াজের সঙ্গে ভারত অনেকদিন কাজ করেছে। ভারত এখনো যখন কথা বলে, রাওয়ালপিণ্ডি ও ইসলামাবাদ দুজনের সঙ্গেই কথা বলে। ইসলামাবাদ পাকিস্তানকে চালায় না। চালায় রাওয়ালপিণ্ডি।'
তার মতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে। ম্যানেজমেন্ট ইফ কোল্ড ওয়ার তো করতেই হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী বলেছিলেন, প্রতিবেশীকে বদলানো যায় না। তাছাড়া ভারত এখন আগের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।