সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ফাইল ছবি
পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ফয়সালাবাদের র্যালিতে বড় প্রতিশ্রুতি দিলেন।
তিনি ক্ষমতায় গেলে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব নামিয়ে আনবেন। একই সঙ্গে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নিয়ে উপহাস করেছেন।
বলেছেন, কোন ‘মামি-ড্যাডি টাইপ’ নয়, পাকিস্তানের যুবসমাজ আছে পিএমএল-এনের সঙ্গে। তিনি বলেন, কেউ কেউ বলে থাকেন— তরুণ সমর্থকরা অন্য কাউকে সমর্থন করে। কিন্তু না, মামি-ড্যাডি তা নন। তারা মুসলিম লিগ নুন। তারা প্রকৃত পাকিস্তানি যুবক। এ জন্য তাদের ভালোবাসেন নওয়াজ শরিফ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
দেশে ফেরার পর সুপ্রিমকোর্ট থেকে ঐতিহাসিক এক রায়ের পর বেশ কয়েকটি মামলায় নিস্তার পেয়েছেন নওয়াজ শরিফ।
আরও পড়ুন: ভারতকে দুটি বন্দর ব্যবহারের অনুমতি, যা বললেন সচিব
ফলে সরকারি পদে তিনি এখন আর অযোগ্য নন। এ জন্য চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে প্রচারণা তীব্রভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তার দলের সামনে ইমরান খানের দল পিটিআই বড় চ্যালেঞ্জ নয়। তার বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাবেক মিত্র পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
এ দল থেকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি প্রধানমন্ত্রী হতে চান।
অন্যদিকে পিটিআই দৃশ্যত নির্বাচনি দৌড়ের বাইরে পড়ে গেছে। এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান জেলে। শীর্ষ নেতারা হয়তো পালিয়ে আছেন অথবা জেলে। তাদের দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করে পিটিআই। কিন্তু ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দলটির প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তাদের প্রতীকও ভিন্ন ভিন্ন। ফলে দলীয় পরিচয় নেই এ ক্ষেত্রে।
এ অবস্থায় নওয়াজ শরিফ তার বক্তব্যে মুদ্রাস্ফীতি কমানো এবং ইলেকট্রিসিটিতে শুল্ক কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন। কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। এর প্রতিকার দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।
মাস থেকে মাস ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ১.৮ ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯.৩৪ ভাগ। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান বলছে, মুদ্রাস্ফীতি একই রকম থেকে যেতে পারে। কিন্তু নওয়াজ বলেন, আল্লাহর ইচ্ছায় যখন একটি পাউরুটি বিক্রি হতো ৪ রুপিতে সেই সময়কে ফিরিয়ে আনব। সবজি, পেট্রল ইত্যাদি এখনকার চেয়ে সস্তায় বিক্রি হবে।
উল্লেখ্য, নওয়াজ শরিফ এর আগে তিনবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু তিনটি মেয়াদের মধ্যে কোনো মেয়াদই তিনি পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারেননি। হয়তো সামরিক অভ্যুত্থানে না হয় আদালতের আদেশে আগভাগেই তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে।
নওয়াজ বলেন, যদি ২০১৭ সালে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা না হতো তা হলে খুব কম মানুষই বেকার থাকতেন। তিনি বলেন, আমি কখনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিই না। আমি সেই মানুষ নই যে, ৫০ লাখ ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা দেয়নি। এর মধ্য দিয়ে তিনি পিটিআইপ্রধান ইমরান খানকে খোঁচা দিয়েছেন।