তাইওয়ানের ভোট উৎসবে চীনের বেলুন আতঙ্ক
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
আঙুলের কর গুণে গুণে আর মাত্র চার দিন। তার পরের দিনই ১৩ জানুয়ারি। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও আইনসভা নির্বাচন। পুরোদমে চলছে ভোট উৎসব।
এরই মধ্যেই দ্বীপাঞ্চলে ‘বেলুন আতঙ্ক’ ছড়াল চীন। বেশ কিছু দিন ধরে দিনের বিভিন্ন সময়ে তাইওয়ানের আকাশে চীনা বেলুনগুলো উড়তে দেখা গেছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সোমবার এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ২০টিরও বেশি বেলুন তাইওয়ান প্রণালির মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। যার মধ্যে অন্তত সাতটি সরাসরি দ্বীপের উপর দিয়ে গেছে।
তাইওয়ানের থিংক ট্যাংক আরএএনডি করপোরেশনের পলিসি ইনিশিয়েটিভ ডিরেক্টর রেমন্ড কুও বলেছেন, বেলুন উড়িয়ে সিসিপি (চীনা কমিউনিস্ট পার্টি) আসন্ন নির্বাচনের দৌড়ে তাইওয়ানের জনগণকে হতাশাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। বিবিসি, এএফপি।
রোববার তৃতীয়বারের মতো আবারও তাইওয়ানের আকাশে তিনটি চীনা নজরদারি বেলুন শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সামরিক বাহিনী ‘গ্রে জোন’ এটিকে তাইওয়ানকে হয়রানির একটি নতুন রূপ বলে অভিহিত করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, আকাশসীমায় বিমান চলাচলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে এবং জনগণের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালাতে নজরদারি বেলুন উড়াচ্ছে চীন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অনুসারে, দিনে এবং সন্ধ্যায় বেলুনগুলো উড়তে দেখা যায়। একেকটি ১২ হাজার থেকে ৩৬ হাজার ফুট (৩.৬ থেকে ১১ কিলোমিটার) পর্যন্ত উচ্চতায় থাকে।
বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো সাধারণত ২৪ হাজার থেকে ৪০ হাজার ফুট (৭.৩ থেকে ১২ কিলোমিটার) উচ্চতায় চলাচল করে। বিমান চালনা বিশেষজ্ঞ গেরি সোয়েজাটম্যান বলেছেন, বেলুনগুলো তাইওয়ানের চারপাশে হুমকি তৈরি করছে। এগুলো সম্ভাব্য বিমান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটায় বলেও জানিয়েছেন। তাইওয়ানের অভিযোগ সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি বেইজিং।
দীর্ঘদিন ধরে স্বায়ত্বশাসিত এ অঞ্চলটিকে (তাইওয়ান) চীন নিজস্ব ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে। বেইজিংয়ের নেতৃত্ব দ্বীপটিকে তার নিয়ন্ত্রণে আনার অঙ্গীকার করেছে। বরাবরই এ দাবিকে অনৈতিক দাবি বলে উড়িয়ে দিয়েছে তাইওয়ান। চলমান এ টানাপোড়েনের মধ্যেই আবার আলোচনায় উঠে এলো খাদ্য কূটনীতি। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভুল তথ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান সম্পর্কে ফাটল ধরাচ্ছে চীন।
তাইওয়ানিজদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা বিষাক্ত শুকরের মাংস খাওয়ানো হয়েছিল। এমনই এক গুজবের প্রতিবাদে সোমবার বিশেষজ্ঞারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের মধ্যে ফাটল তৈরি করতে এ গুজব ছড়িয়েছে চীন। কয়েক সপ্তাহ আগে আরেকটি গুজব ওঠে দেশটিতে- তাইওয়ানের সরকার একটি জৈব অস্ত্র তৈরির জন্য গোপনে নাগরিকদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে।
এ গুজবকেও উড়িয়ে দেওয়া হয়। গুজবগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে পুরোপুরি চীনের হাত রয়েছে বলে বিশ্বাস বিশেষজ্ঞদের। বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যাতে তাইওয়ানকে সহায়তা না করে এজন্য চীন বারবার অপপ্রচারের পথ বেছে নিচ্ছে।