Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

কোরিয়া উপদ্বীপে যুদ্ধ ‘অনিবার্য’: কিম

রণগর্জনে নতুন বছর শুরু

দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক হামলার হুমকি

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম

রণগর্জনে নতুন বছর শুরু

প্রায় সারা বছর ধরেই যুদ্ধংদেহী মেজাজে ছিল উত্তর কোরিয়া। যুদ্ধোত্তাপের সেই আঁচই আবার ফিরছে নতুন বছরের উনুনেও। ভয়ংকর রণগর্জনেই নতুন বছর শুরু করলেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। বছরের শেষ দিনে এমন পূর্বাভাসই দিল উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ। এএফপি, রয়টার্স, সিএনএন। 

খবরে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে আরও তিনটি গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে উত্তর কোরিয়া। পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার বাড়াবে। সামরিক শক্তি বাড়ানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন কিম জং উন। এমনকি নতুন বছরের যে কোনো সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক হামলারও হুমকি দেন উন। উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের চলতি বছরের শেষ বৈঠকে আগামী বছরের জন্য নেওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর এটি একটি।

পাঁচ দিনের এ বৈঠক শেষ হয় শনিবার। সভাপতিত্ব করেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র  দীর্ঘদিন ধরে কোরীয় উপদ্বীপে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে আসছে। তারা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে। বছর শেষ হতে যাচ্ছে, তা সত্ত্বেও তারা উত্তর কোরিয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সামরিক হুমকি অব্যাহত রাখছে।’ এরই ধারাবাহিকতায় নতুন বছরে তিনটি গুপ্তচর উপগ্রহ, সামরিক ড্রোন এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। কিম জং-উনকে উদ্ধৃত করে কেসিএনএ বলেছে, ‘আমাদের আক্রমণ করার জন্য শত্রুদের বেপরোয়া আচরণের কারণে মনে হচ্ছে, কোরীয় উপদ্বীপে যে কোনো সময় যুদ্ধ শুরু হতে পারে।’

কিম আরও বলেন, পারমাণবিক উচ্চাকাক্সক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতাকারী অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা ছাড়া তার আর কোনো বিকল্প নেই। চীন ও রাশিয়া উভয়ের সঙ্গেই উত্তর কোরিয়ার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বলেন, ‘শত্রু বাহিনীর সংঘর্ষমূলক সামরিক কর্মকাণ্ডের দিকে ঘনিষ্ঠভাবে তাকালে দেখব, যুদ্ধ শব্দটি পরিণত হয়েছে একটি বাস্তবতায়। এটা কোনো বিমূর্ত ধারণা নয়।’ ‘দক্ষিণ কোরিয়ার সমগ্র ভূখণ্ডকে শান্ত করতে’ প্রস্তুত থাকার জন্য তিনি উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন। যে কোনো আক্রমণের জবাবে প্রয়োজনে পারমাণবিক বোমা প্রস্তুত রাখার জন্যও বলেছেন তিনি। সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিলেন কিম।

তৃতীয় প্রচেষ্টায় নভেম্বরে সফলভাবে কক্ষপথে একটি গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করে পিয়ংইয়ং। তখন থেকে পিয়ংইয়ং দাবি করে আসছে, কৃত্রিম উপগ্রহটি যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থান-স্থাপনার ছবি তুলে পাঠাচ্ছে। চলতি বছর উত্তর কোরিয়া রেকর্ডভাঙা বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। চলতি মাসে দেশটি তার সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) চালু করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো জায়গায় পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ায় এ বছরই নির্বাচন। তার ঠিক আগে কিম জং-উনের এমন ঘোষণায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত সামরিক চাপ অব্যাহত রাখতে পারে পিয়ংইয়ং। সে নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জো বাইডেনের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন। আর ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের শুধু হুমকি আদান-প্রদানই নয়, ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্কও স্থাপিত হয়েছিল। বাইডেনের প্রশাসন পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে উন্মুক্ত থাকার কথা বললেও উত্তর কোরিয়ার ওপর বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ, উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। অন্যদিকে, কোরীয় উপদ্বীপের কাছে পারমাণবিক অস্ত্রধারী সাবমেরিন এবং বড় বিমানবাহী রণতরীসহ সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম