ক্ষমতা দখল যুদ্ধে ভয়ংকর সুদান
ধরে ধরে ছেলেদের হত্যা করছে আরব জঙ্গিরা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫০ পিএম
সেনা-আধাসেনা বাহিনীর ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বিপর্যস্ত সুদান। দিন-সপ্তাহ গুনতে গুনতে টানা আট মাস পেরোলেও থামার লক্ষণ নেই। উলটো ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ সংঘাত আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। ক্ষমতাসীন সেনা সরকারকে উৎখাত করতে আধাসামরিক বাহিনীর (আরএসএফ) সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলছে আরব জঙ্গিরা। আরএসএফ সমর্থিত উগ্র গোষ্ঠীটির নৃশংসতায় প্রাণ হারাচ্ছে দেশটির মাসালিত উপজাতির অধিবাসীরা।
বিশেষ করে ছেলেরা। মাসালিত উপজাতির ছেলেরা যেন যোদ্ধা হয়ে উঠতে না পারে, এজন্য তাদের টার্গেট করছে আরব জঙ্গিরা। যেখানেই দেখছে সেখানেই গুলি অথবা ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করছে। জল্লাদের মতোই মানুষ জবাই করছে জঙ্গিরা। শুক্রবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদানের বাসিন্দা রাদিয়া ইয়াহিয়া আব্বাকর বলেছেন, জুন মাসে চাদ সীমান্ত থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গিরা তার ছেলে আব্বাকর ও অন্য দুই ছেলেকে বেঁধে পশুর মতো জবাই করেছে।
সুদানের রক্তক্ষয়ী সংঘাত কত শত মায়ের বুক খালি করে দিয়েছে তার হিসাব নেই। ৩৬ জন মা রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের বাচ্চাদের খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। ৬ জন মা বলেছেন, আরএসএফ এবং আরব জঙ্গিরা তাদের প্রায় ছয় মাস বয়সি বাচ্চাদের পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। নিহত ছয় শিশুর মধ্যে পাঁচজনই ছেলে।
চাদে পালিয়ে আসা অন্য ১০ জন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেছেন, তারা চোখের সামনে তাদের সন্তানদের গলা কাটা দেখেছেন। যাদের সবাই ছিল ছেলে। আজিজা আদম মোহাম্মদ (২৮) বলেছেন, ১৪ জুন তার ছয় মাস বয়সি ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। অন্য শরণার্থীদের সঙ্গে চাদে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে হত্যা করা হয়। আরও বলেছেন, আরব মিলিশিয়ারা আমাদের দলের মুখোমুখি হওয়ার সময় বলছিল, ছেলেদের গুলি কর, ছেলেরা বড় হয়ে আমাদের মেরে ফেলবে। সুতরাং আমাদের এখনই তাদের মেরে ফেলতে হবে।’
জঙ্গিরা মাসালিত পুরুষদের টার্গেট করছে জেনে অনেক মা তাদের ছেলেদের মাথায় স্কার্ফ, কালো আবায়া অথবা বোরকা পরিয়ে চাদে নিয়ে গেছেন। অনেকে আবার এ উপায়েও বাঁচাতে পারেননি তাদের ছেলে সন্তানদের। আওয়াতেফ অ্যাডাম (৪৩) চাদে যাওয়ার সময় তার ১২ বছর বয়সি ছেলে ফয়েজকে মাথায় স্কার্ফ ও একটি কালো আবায়া পরিয়েছিলেন। কিছুটা পথ পেরোনোর পরই জঙ্গিরা তার পোশাক খুলে পরীক্ষা করা শুরু করে। তার আবায়া খুলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। প্রাণ বাঁচাতে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।