ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। আসন্ন সেই নির্বাচনে লড়বেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সর্বোচ্চ নেতা নওয়াজ শরিফ।
বুধবার নওয়াজ শরিফ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার জামাতা ক্যাপ্টেন (অব.) মুহাম্মদ সফদার। খবর দ্য ডনের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দেশটির খাইবার-পাখতুনখাওয়ার মানসেহরা অঞ্চল থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।
সফদার মানসেহরার বাসিন্দা এবং শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজের স্বামী। মিডিয়াকে তিনি বলেছেন, ৭৩ বছর বয়সি তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে বৃহস্পতিবারের মধ্যে জাতীয় পরিষদের মানসেহরা-তোরঘর আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।
মানসেহরা হাজারা বিভাগের অংশ, যা পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর শক্তিশালী ঘাঁটি বলে পরিচিত। নওয়াজ শরিফ মানসেহরা ছাড়াও লাহোর থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সফদার মানসেহরাতে ডেপুটি কমিশনারের অফিসের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নওয়াজ শরিফ এনএ-১৫ (মানসেহরা-২) থেকে আমাদের নির্বাচনি প্রার্থী হবেন। তিনি খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশ থেকে জয়ী হয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হবেন।’
তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তিনি মনোনয়নপত্র নিয়েছেন এবং বৃহস্পতিবার জমা দেবেন।
ক্যাপ্টেন (অব.) মুহাম্মদ সফদার আরও বলেন, খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আমির মুকামকে মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য পিএমএল-এন বেছে নিয়েছে। আর তার স্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদে দলের প্রার্থী হচ্ছেন। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পরে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
সফদার এর আগে এনএ-১৫ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে তিনি এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কারণ তিনি সিনেটর হতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি কখনই সিনেটের মনোনয়নের জন্য দলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করব না।’
পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ লন্ডনে দীর্ঘ চার বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে গত অক্টোবর মাসে পাকিস্তানে ফিরেছেন। ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকারের আমলে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর চিকিৎসার কারণে সাত বছরের কারাদণ্ডের মাঝামাঝি সময়ে লন্ডনের উদ্দেশে পাকিস্তান ত্যাগ করেছিলেন নওয়াজ।
এর আগে সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফের শাসনামলে নওয়াজ আট বছরের জন্য সৌদি আরবে নির্বাসিত ছিলেন। এর পর ২০০৭ সালে নওয়াজ শরিফ নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন এবং ২০১৩ সালে তিনি তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন।
এর পর ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বহুল আলোচিত আল-আজিজিয়া মিলস ও অ্যাভেনফিল্ড দুর্নীতি মামলায় নওয়াজকে দোষী সাব্যস্ত করে দেশটির আদালত। এ মামলায় লাহোরের কোট লাখপাত কারাগারে সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন তিনি।
কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য ২০১৯ সালের নভেম্বরে লন্ডনে যান নওয়াজ শরিফ। পরে চলতি বছরের অক্টোবরে পাকিস্তানে ফিরে আসেন তিনি।