Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের বাধায় বাড়িতে ফিরতে পারছে না উত্তর গাজার বাসিন্দারা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:০৫ পিএম

ইসরাইলের বাধায় বাড়িতে ফিরতে পারছে না উত্তর গাজার বাসিন্দারা

ইসরাইল ও হামাস ৪৮ দিন পর শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে গেছে। তবে কোনো ধরনের হামলার খবর পাওয়া না গেলেও যুদ্ধবিরতি বেশ নড়বড়ে বলে মনে হচ্ছে। 

আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজার উত্তর অংশের ফিলিস্তিনিদের নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে বাধা দিচ্ছে ইসরাইল। এ বিষয়ে তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। 

কয়েকদিন আগেই উত্তর গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ ও ক্ষেপনাস্ত্র হামলা করে ইসরাইল। এতে ভিটেমাটি ছেড়ে দক্ষিণ গাজায় স্থানান্তরিত হয় অসংখ্য মানুষ। যুদ্ধবিরতি হওয়ার কারণে নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে চাইছেন ওই বাসিন্দারা। তবে বাড়িতে ফিরতে বাধা দিচ্ছে ইসরাইল। 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত অঞ্চলটিতে আরও বেশি পরিমাণে মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারে থাকা বেশ কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দেওয়া হবে।

রয়টার্সের এক সংবাদদাতা গাজা উপত্যকা থেকে ট্যাংকসহ কয়েক ডজন ইসরাইলি সামরিক যানকে সরে যেতে দেখেছেন। সাঁজোয়া কলামে থাকা বেশ কয়েকজন সেনা বলেছেন, তাদের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের রাস্তায় জনতার ভীড় ছিল। সেখান থেকে ফিলিস্তিনি নাগরিক খালেদ আবু আনজাহ রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো প্রতিরোধ করে আশাবাদী ও গর্বিত। শত ব্যথা সত্ত্বেও আমাদের অর্জনে আমরা আনন্দিত।

হামাস শাসিত ছিটমহলের অভ্যন্তরে কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজা শহরের একটি হাসপাতাল বোমা হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু ছিল। উভয় পক্ষই সতর্ক করেছে যুদ্ধবিরতি সাময়িক সময়ের জন্য হবে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালটিতে লাগাতার বোমা হামলা করা হয়েছে। এখানে বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকার ছিল। হাসপাতালে শয্যাশায়ী বৃদ্ধ ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি ছিল যারা নিজে নিজে নড়াচড়া করতে পারে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির এল বার্শ আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, একজন রোগী ও একজন আহত মহিলা মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন আরও তিনজন।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি দোহায় জানিয়েছেন, গাজায় অতিরিক্ত সাহায্য পাঠানো হবে এবং বৃদ্ধ ও নারীসহ প্রথম ধাপে জিম্মিদের স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় মুক্ত করা হবে। চার দিনে মোট ৫০জনকে মুক্তি দেওয়া হবে।

রয়টার্স টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর মিসর থেকে ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করছে। দুটি ট্রাক মিসরীয় সংস্থা থেকে এসেছে। এদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘মানবতার জন্য একতা’ ‘গাজার ভাইদের জন্য’।

মিসর বলেছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হলে প্রতিদিন গাজায় ১ লাখ ৩০ হাজার লিটার ডিজেল ও চার ট্রাক গ্যাস সরবরাহ করা হবে এবং প্রতিদিন ২০০ ট্রাক সাহায্য গাজায় প্রবেশ করবে।

কাতারি মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েলি কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আমরা সবাই আশা করি যে এই যুদ্ধবিরতি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার জন্য বৃহৎ পরিসরে কাজ করার রাস্তা তৈরি করে দেবে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীও বলেছে যে শীঘ্রই যুদ্ধ আবার শুরু হবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি এক বিবৃতি অনুসারে বৃহস্পতিবার নৌ কমান্ডোদের একথা জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি একটি সংক্ষিপ্ত বিরতি হবে, যার উপসংহারে যুদ্ধ, লড়াই দুর্দান্ত শক্তির সঙ্গে চলতে থাকবে। পাশাপাশি আরও জিম্মিদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করা হবে। কমপক্ষে দুই মাস যুদ্ধ চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, উত্তর গাজার নিয়ন্ত্রণ লম্বা সময় ধরে যুদ্ধ করার প্রথম ধাপ। আমরা পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ইসরায়েলের মতে, ৭ অক্টোবর হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ৪৮ দিন ধরে অবরুদ্ধ ছিটমহলে বোমা হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে প্রায় ১৪ হাজার ফিলিস্তিনি মারা গেছে। নিহতের মধ্যে ৪০ শতাংশই শিশু। গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার হাজার হাজার মানুষ সহিসংতা থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। তবে পরিস্থিতি আরও মরিয়া হয়ে উঠছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম