ওয়াশিংটন পোস্ট ও জার্মান আউটলেট ডের স্পিগেলের যৌথ তদন্ত
নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন বিস্ফোরণের পেছনে ইউক্রেন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:১৮ পিএম
রাশিয়া নয়, নর্ড স্ট্রিম নাশকতার পেছনে দায়ী ইউক্রেনের স্পেশাল অপারেশন ফোর্সের কমান্ডার রোমান চেরভিনস্কি (৪৮)। শনিবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ও জার্মান আউটলেট ডের স্পিগেলের যৌথ তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাশকতার ‘সমন্বয়কারী’ ছিলেন চেরভিনস্কি। দুই গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেন ও ইউরোপের অন্যান্য জায়গার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অপারেশন সম্পর্কে জানেন এমন অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোপন এ তথ্যগুলো প্রকাশ করেছেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, সেসময় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে একটি পালতোলা নৌকা ভাড়া করেছিলেন চেরভিনস্কি। পাইপলাইনে বিস্ফোরক চার্জ স্থাপনের জন্য ডাইভিং সরঞ্জাম ব্যবহার করেছিলেন তিনি। নর্ড স্ট্রিম বাল্টিক সাগরের তলদেশে রাশিয়া থেকে জার্মানি পর্যন্ত চলমান পাইপলাইন। গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর পাইপলাইনগুলোতে শুরু হয়েছিল একের পর এক বোমা বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণে নর্ড স্ট্রিম-১ ও নর্ড স্ট্রিম-২ এর চারটি পাইপলাইনের মধ্যে তিনটি ফেটে গিয়েছিল। এতে ডেনমার্কের বোর্নহোমের কাছে বাল্টিক সাগরে ছড়িয়ে পড়েছিল গ্যাস।
ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানির একটি প্রধান পথ ছিল এটি। নাশকতার পর ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানির প্রধান একটি রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমন বিস্ফোরণের পেছনে কে দায়ী তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। বিভিন্ন সময় ইউক্রেন, রাশিয়া অথবা যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আঙুল তুলেছেন কেউ কেউ। যদিও সবাই এতে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সেসময় রাশিয়াকেই দায়ী করেছিলেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট ও ডের স্পিগেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপারেশনের পরিকল্পনার পেছনে ইউক্রেনের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও দায়ী ছিলেন। ইউক্রেনের সর্বোচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনিরও এ বিষয়ে সম্মতি ছিল বলে জানানো হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে। যদিও তার আইনজীবীর মাধ্যমে নাশকতায় তার কোনো হাত আছে এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ভ্যালেরি।
ওয়াশিংটন পোস্ট ও ডের স্পিগেলকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘নর্ড স্ট্রিম হামলায় আমার জড়িত থাকার বিষয়ে সব জল্পনা কোনো ভিত্তি ছাড়াই রুশ প্রোপাগান্ডা কর্তৃক ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
নাশকতার পেছনে তার দেশ দায়ী ছিল তা বারবার অস্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত জুনে তিনি জার্মানির বিল্ড সংবাদপত্রকে বলেছিলেন, ‘আমি কখনই তা করব না। অভিযোগের বিষয়ে আমি প্রমাণ দেখতে চাই।’ তবে এবারের তদন্তের বিষয়ে ইউক্রেন সরকার কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট ও ডের স্পিগেল।