গাজায় সকাল থেকেই শুরু প্রতিদিনের জীবনযুদ্ধ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৮ পিএম
আমাল আল-রোবায়া। পরিবারসহ আশ্রয় নিয়েছেন গাজার দক্ষিণের জাতিসংঘের স্কুলে। স্বামী, ছয় সন্তান, পুত্রবধূ ও দুই নাতিকে নিয়ে থাকেন। সকাল ৮টা বাজলেই বেড়িয়ে পড়েন খাবারের সন্ধানে। অবরুদ্ধ গাজায় বেঁচে থাকার লড়াইয়ে তিনিও এক সাধারণ যোদ্ধা।
ইসরাইলি আগ্রাসনের মধ্যে তার পরিবারকে সমর্থন করার জন্য রোবায়ার প্রতিদিনের সংগ্রাম জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। তবুও দমে নেই। পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে দিনের আলো ফুটতেই নেমে পড়েন জীবনযুদ্ধে। রোবায়া এএফপিকে বলেছেন, ‘আমি ঘুম থেকে উঠেই ভাবি বাচ্চাদের কীভাবে খাওয়াব। এজন্য খাবারের খোঁজে বেড়িয়ে পড়ি।
রোবায়া জানান, যে অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে তিনি বাস করতেন তা ইসরাইলের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গেছে। আরও বলেন, আমার ছেলের একটি ঘোড়ার গাড়ি ছিল। যেটা জীবিকার জন্য ব্যবহার করা হতো। ইসরাইলের ভয়াবহ হামলায় ঘোড়াটিও আর বেঁচে নেই। আয়-রোজগারের পথ হারিয়ে প্রতিনিয়ত জীবিকার জন্য লড়াই করছেন। তার ২৮ বছর বয়সি ছেলে সুলেমান বলেছেন, কয়েকদিন আগে আমি সাড়ে চার ঘণ্টা একটি বেকারির সামনে লাইনে অপেক্ষা করেছিলাম। যখন আমার সময় এসেছিল তখন তারা আমাকে বলেছিল, তাদের কাছে আর কোনো রুটি অবশিষ্ট নেই। বাচ্চাদের জন্য আমি তাদের খাবার দিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তাদের কিছু করার ছিল না। সব খাবার শেষ হয়ে গিয়েছিল।
রোবায়ার স্বামী ইমেদ বাঁশি বাজানোর সঙ্গে পুরোনো ফিলিস্তিনি গান ও কিছু আধুনিক সুর বাজিয়ে বাচ্চাদের খুশি রাখার চেষ্টা করেন। বলেন, এ দুঃসময়ে বাচ্চাদের মুখে হাঁসি ফুটানোর জন্য আমার কাছে একমাত্র বাঁশি আছে।
রাত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রোবায়ার পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরে যায়। হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে ঘুমায়। রোবায়া বলেন, আগের রাতের তুলনায় এখন একটু বেশিই ঠান্ডা। আমাদের কাছে বাচ্চাদের দেওয়ার জন্য শীতের পোশাক নেই। ঠান্ডায় বাচ্চারা ঘুমাতে পারে না। আবার ঘুমালেও ড্রোনের শব্দে চিৎকার করে উঠে। আমরা নতুন ভোরের অপেক্ষায় রাত কাটাই, যাতে বাড়ি ফিরতে পারি।