গাজায় জাতিগত নির্মূল পরিকল্পনা ইসরাইলের
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৯ পিএম
গাজায় পরপর আক্রমণ আর অবরোধ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। এরমধ্যে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুরু করেছে স্থল আক্রমণ। ইসরাইল স্থল আক্রমণ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে গাজার বেশিরভাগ অথবা সব জনগণকে পার্শ্ববর্তী মিসরীয় অঞ্চল সিনাই উপদ্বীপে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা সংবাদ মাধ্যমগুলোর বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে আসে।
গাজায় ইসরাইল জাতিগত নির্মূল চায় তা স্পষ্ট। এমনকি এ বিষয়ে আংশিক ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরাইলি আউটলেট ক্যালক্যালিস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। জাতিগত নির্মূল পরিকল্পনার রূপরেখা নিয়ে তৈরি ইসরাইলের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের (মিনিস্ট্রি অব ইন্টিলিজেন্স) ফাঁস হওয়া একটি নীতির খসড়া নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
ফাঁস হওয়া ইসরাইলের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের পর উপদ্বীপের উত্তরে স্থায়ী সম্প্রদায় তৈরির আগে প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিকে প্রাথমিকভাবে তাঁবুর শহরে রাখা হতে পারে। কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত এই অঞ্চলটিকে ঘিরে রাখবে সামরিক বাহিনী। সে কারণেই গাজায় ফিরে আসার কোনো উপায় তাদের আর থাকবে না।
ফিলিস্তিনিদের সিনাইয়ে বহিষ্কার ‘ইতিবাচক’ আর এতে দীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত ফলাফল আসবে বলে বিশ্বাস করে মন্ত্রণালয়। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের এই পরিকল্পনা ২০০৭ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরপরই করা হয়েছিল। তবে ‘অনুমানমূলক’ দাবি করে ফাঁস হওয়া নথিটি দ্রুত খারিজ করে দিয়েছিল ইসরাইল।
যুদ্ধের আড়ালে ফিলিস্তিনিদের সিনাই উপদ্বীপে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে লবিং করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত সোমবার ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনেও এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে চেক প্রজাতন্ত্র ও অস্ট্রিয়াসহ কিছু ইইউ সদস্য অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে এ বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউরোপীয় কূটনীতিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, এ বিষয়ে সম্মতি প্রদান করতে মিসরীয়দের ওপর চাপ বাড়ানোর সময় এখন এসেছে। এই পরিকল্পনায় মিসরের সম্মতি গ্রহণে ১৬ বছর ধরে ব্যর্থ ইসরাইল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে মিসরকে চাপ দিতে পারে দেশটি।
এর আগে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল সৃষ্টির সময় ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ফিলিস্তিনিরা সে সময়কে তাদের ‘নাকবা বা বিপর্যয়’ হিসাবে অভিহিত করে থাকে।