গাজা উপত্যকায় শুক্রবার থেকে ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে শুরু করে সব ধরনের যোগাযোগ ব্ল্যাকআউট চলছে। এ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা গাজায় স্টারলিংক ইন্টারনেট সরবরাহের জন্য ইলন মাস্ককে আহ্বান জানিয়েছেন। এক্সে ‘স্টারলিংক ফর গাজা’ নামে একটি হ্যাশট্যাগ প্রচারণা শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে গাজার জন্য স্টারলিংক ইন্টারনেট প্রদানে সমর্থনও প্রকাশ করেছেন মাস্ক। তবে এ ব্যাপারে গাজা থেকে এখনো তার বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক বলেন, গাজায় ইন্টারনেট সংযোগের কর্তৃপক্ষ কারা তা আমাদের জানা নেই। তবে এ পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ চেয়ে কেউ আবেদন করেননি।’
ইলন মাস্ক এক্স এবং স্পেসএক্স উভয়েরই মালিক। স্টারলিংক একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট নক্ষত্রমণ্ডল। এটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সরবরাহ করতে ব্যবহৃত হয়।
তবে যোগাযোগ পুনরুদ্ধারে স্টারলিংক গাজায় কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। কাতারের দোহায় অবস্থিত হামাদ বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডল ইস্ট স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক মার্ক ওয়েন জোনস বলেন, গাজায় স্টারলিংকের ইন্টারনেট কার্যকর হবে কিনা তা অনিশ্চিত।’ আলজাজিরাকে তিনি বলেন, ‘আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের পাঁচ লাখ পোস্টে দেখেছি, স্টারলিংককে গাজায় ইন্টারনেট সরবরাহ করা উচিত। কিন্তু সাধারণ মানুষ এটি বুঝতে পারছে না, ‘গাজায় স্টারলিংকের ইন্টারনেট প্রদান অসম্ভব প্রক্রিয়া।’
তিনি আরও বলেন, গাজার স্টারলিংক টার্মিনাল অথবা ডিশ এন্টেনা স্থাপন করা আর ইন্টারনেট বিতরণ করা কঠিন হবে। কারণ আমদানির ক্ষেত্রে ইসরাইলের সরকারের আইনি অনুমোদন দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। আর স্টারলিংকের ইন্টারনেট গাজায় প্রবেশ করলেও পর্যাপ্ত জ্বালানির অভাবে এটি চালানো সম্ভব হবে না। ওয়েন জোনস আরও বলেন, স্টারলিংক নেটওয়ার্ক সাধাণরত গ্রাউন্ড স্টেশনের ওপর নির্ভর করে চালানো হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তার অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তবে যোগাযোগ পুনরুদ্ধারে মিসর সাহায্য করতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বলছেন, গাজায় ইন্টারনেট পরিষেবা চালুতে রাফাহ ক্রসিংয়ে টার্মিনাল স্থাপন করতে পারে স্টারলিংক। যদিও ওয়েন জোনস বলেন, ‘মিসর কিংবা স্টারলিংক টার্মিনাল স্থাপনের অনুমতি দিলেও তার কার্যকারিতা সীমিত হবে।’এ ছাড়া অঞ্চলটিতে ইসরাইলের নিরলস বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। তাই এটি কিভাবে কাজ করবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
এদিকে মিসরভিত্তিক সাংবাদিক ও লেখক মিরনা এল হেলবাউই গাজার মানুষকে সাহায্য করতে সারা বিশ্ব থেকে ই-সিম সংগ্রহের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি প্রচারণা শুরু করেছেন। গাজার বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ ও কয়েকজন ডাক্তারকে বিনামূল্যে ই-সিম পাঠাতে তিনি সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।