ইসরাইলের স্থল, সমুদ্র এবং বিমান অবরোধে বেষ্টিত ছোট্ট একটি জনপদ গাজা। মাত্র ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১০ কিলোমিটার প্রস্থের ভূখণ্ডের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনির মুক্তিকামী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস।
শনিবার ভোরে আকস্মিক হামলায় ইসরাইলে তাণ্ডব চালায় বাহিনীটি। শক্তিশালী ইসরাইলের কঠোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে কীভাবে এমন ধ্বংসলীলা চালাল ছোট্ট এ সংগঠন? সীমান্তে কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ সত্ত্বেও হামাসের যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহের কৌশল নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
গাজা উপত্যকার আশপাশের মানচিত্র লক্ষ করলে দেখা যায়, ইসরাইলসহ স্থানটি মিসরের সঙ্গে একটি সীমান্ত ভাগ করেছে। পশ্চিমে আবার ভূমধ্যসাগর। সমুদ্রভিত্তিক চোরাচালান হামাসের যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহের অন্যতম উৎস।
অস্ত্র ব্যাবসায়ীরা ভূমধ্যসাগরের তীরে গাজার উপকূলে অস্ত্র ফেলে দেয়। পরে এই অস্ত্রগুলো হামাসের হাতে আসে। দুর্ধর্ষ ইসরাইল বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র সংগ্রহে হামাসের আরও একটি মাধ্যম গোপন টানেল নেটওয়ার্ক।
২০০৫ সালে ইসরাইলের গাজা প্রত্যাহারের পর, হামাস মিসর-গাজা সীমান্তের নিচে একটি জটিল টানেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইরান এবং সিরিয়ার সঙ্গে একটি গোপন সরবরাহ রুট স্থাপন করা হয়।
প্রতিবেশী এই দুই দেশের সঙ্গে হামাসের বন্ধুত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশি উৎস থেকেও যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহ করে সংগঠনটি। ফজর-৩, ফজর-৫ এবং এম৩০২ রকেটসহ বিভিন্ন শক্তিশালী অস্ত্রগুলো এ সূত্র থেকেই আসে।
তালেবান যোগসূত্রকেও হামাসের যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহের একটি মাধ্যম হিসাবে দেখা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত অস্ত্রগুলোই হামাস ব্যবহার করছে। আফগানিস্তান থেকে তালেবানরা হামাসকে এ যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করছে।
২০২১ সালে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তাদের কার্যক্রম শেষ করে। তবে দেশটিতে তাদের অস্ত্রের মজুত রেখে যায়। সেই অস্ত্রই এখন হামাস গোষ্ঠী ব্যবহার করছে বলে অনেকের দাবি।
এদিকে চলমান এ সংঘাতে হামাসের ব্যবহৃত যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসের একজন নারী সদস্য। রিপাবলিকান প্রতিনিধি মার্জোরি টেলর গ্রিন রোববার এ প্রশ্ন তোলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, অস্ত্রগুলো ইউক্রেন বা আফগানিস্তান থেকে আসতে পারে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অস্ত্র পাঠাচ্ছে।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করে লিখেন, ‘ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাস দ্বারা ব্যবহৃত যে কোনো মার্কিন অস্ত্রের সিরিয়াল নম্বর ট্র্যাক করতে আমাদের ইসরাইলের সঙ্গে কাজ করতে হবে। তারা কি আফগানিস্তান থেকে এসেছে? তারা কি ইউক্রেন থেকে এসেছে? খুব সম্ভবত উত্তর উভয়ই।’