ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের জন্য ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে একটি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সেখানে সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ ছিল পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতিকে অনুমোদন দেওয়া। অন্য বেশিরভাগ দেশ মনে করে এসব বসতি অবৈধ।
জাতিসংঘে বেশিরভাগ দেশ বলছে এসব বসতি হয়েছে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে। এমনকি সরকারিভাবে যুক্তরাষ্ট্রও এর সঙ্গে একমত।
কিন্তু ট্রাম্প ঘোষণা দেন ইসরাইলি বসতিকে তিনি আর আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন মনে করেননা। তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন। কিন্তু অবৈধ হোক আর না হোক, বসতি আছে ও বাড়ছে।
ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীরকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ মনে করে। কিন্তু ইসরাইল যুদ্ধের পর থেকেই সেখানে বসতি বাড়াচ্ছে।
৭০, ৮০ ও ৯০ এর দশকে বহু বসতি স্থাপন করেছে ইসরাইল। গত বিশ বছরে তাদের জনসংখ্যাও দ্বিগুন হয়েছে। সেখানে পানি ও বিদ্যুৎ সেবা দিচ্ছে ইসরাইল। তাদের সুরক্ষা দেয় ইসরাইলি সেনারা।
স্যাটেলাইট থেকে নেওয়া চিত্রে দেখা যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিভাবে বসতিগুলো বেড়েছে।
২০০৪ সালে গিভাট জাইভ বসতিতে দশ হাজারের মতো মানুষ ছিলো, আর এখন আছে সতের হাজার। এখন পশ্চিম দিকে আরও বাড়ছে। বাড়ছে নতুন বাড়ি, উপাসনালয় ও শপিং সেন্টার।
বসতিগুলো নানা আকারের। কিছু আছে যেখানে কয়েকশ মানুষ বাস করে। সবচেয়ে বড়গুলোর একটিতে ৭৩ হাজার ৮০ জন বাস করে। গত ১৫ বছরে তাদের সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে।
গড়ে ইসরাইলি নারীদের এখন সাতটির বেশি সন্তান। এমনিতেই ইসরাইলে জন্ম হার ৩.১। আর দখলকৃত এলাকার বসতিগুলোতে সেটি আরও বেশি।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে জন্ম হার কম। এর প্রভাব পড়বে মোট জনসংখ্যাতেও।
যেখানে বসতি করা হচ্ছে সেটিকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ মনে করে। তারা মনে করে বসতিগুলো সরাতে হবে তাদের রাষ্ট্রের জন্য।
ইসরাইলিরা পশ্চিম তীরে কেন বসতি করতে চায়?
কিছু লোক এসব বসতিতে গেছেন অধিকতর সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশায়। কারণ সেখানে ঘরবাড়ি বানানোর খরচ খুব কম। নানা সুবিধার কারণে সেখানকার জীবনমান উন্নত।
আর কিছু মানুষ গেছেন কঠোর ধর্ম বিশ্বাসের কারণে। তারা মনে করেন ঈশ্বর এ জায়গা তাদের জন্য দিয়েছে।
তবে এক তৃতীয়াংশই সেখানকার অতিমাত্রায় রক্ষনশীল। তাদের সংসার বড় ও কিছুটা দরিদ্র। আর কিছু আছেন যারা মনে করেন ইহুদিদের প্রাচীন ভূমি হওয়ার কারণে সেখানে তাদেরই বাস করার অধিকার রয়েছে।
দুই-জাতি সমাধান কারা চায়?
এ ভূমিকে ভাগ করে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সমর্থক ক্রমশ কমছে। ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনদের ৭১ ভাগ আর ইসরায়েলিদের ৬৮ ভাগ এর সমর্থক ছিলো। ১৮ সালে এ সংখ্যা যথাক্রমে ৪৪ ও ৫৫।
অন্যদিকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনদের এক করার পক্ষে ৩৬ভাগ ফিলিস্তিনি ও ১৯ ভাগ ইসরায়েলি ইহুদি ও ৫৬ ভাগ ইসরাইলি আরব।
খারাপ খবর হলো দুই জাতি তত্ত্বের সমর্থন তরুণদের মধ্যেই বেশি কমছে।