তাপের প্রকোপে মরছে আমাজনের ডলফিন। ঐতিহাসিক খরা ও রেকর্ড-উচ্চ পানির তাপমাত্রার মধ্যে ব্রাজিলের আমাজনে শতাধিক ডলফিন মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট অতিক্রম করেছে। ব্রাজিলের বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত একটি গবেষণা সুবিধা মামিরাউ ইনস্টিটিউটের মতে, মৃত ডলফিনগুলোকে গত সাত দিনে লেক টেফে অঞ্চলে পাওয়া গেছে। সংস্থাটি ধারণা করেছে, রেকর্ড-উচ্চ হ্রদের তাপমাত্রা এবং আমাজনে একটি ঐতিহাসিক খরার কারণে এমনটি হয়েছে। সিএনএন।
ওই এলাকায় বসবাসকারী ব্রিটিশ গবেষক ড্যানিয়েল ট্রেগিডগো বলেন, এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। খবরটি এই অঞ্চলে মানুষের কার্যকলাপ এবং চরম খরার প্রভাব নিয়ে জলবায়ুবিজ্ঞানীদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন খরা চলছে এবং লেক টেফে অঞ্চলটি উচ্চতাপমাত্রার সঙ্গে যুক্ত। এখানকার কিছু জায়গায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে।
সংস্থাটি জানায়, আমাজন নদী, বিশ্বের বৃহত্তম জলপথ, বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে রয়েছে এবং নদীর প্রাণীজগতের বেশ কয়েকটি নমুনাও রেকর্ড-উচ্চ তাপমাত্রায় ভুগছে। মামিরাউয়া ইনস্টিটিউটের গবেষক আয়ান ফ্লিসম্যান বলেন, ‘রোগ, পয়ঃনিষ্কাশন ও দূষণসহ বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ হিসাবেও অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে পানির তাপমাত্রা অবশ্যই প্রধান কারণ।’
গবেষক এবং কর্মীরা বেঁচে থাকা ডলফিনগুলোকে স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন। যেখানে পানি কিছুটা শীতল থাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এলাকার দুর্গমতার কারণে কাজটি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মামিরাউয়া ইনস্টিটিউটের গবেষক আন্দ্রে কোয়েলহো সিএনএনের একজন কর্মকর্তাকে বলেন, ‘নদীর ডলফিনকে অন্য নদীতে স্থানান্তর করা ততটা নিরাপদ নয়। কারণ টক্সিন বা ভাইরাস আছে কিনা তা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।’ আমাজনের এ পরিস্থিতি অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলছে। কর্তৃপক্ষ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরও তীব্র খরার আশঙ্ক করছে। যার ফলে ডলফিনের আরও মৃত্যু হতে পারে।
বিশ্বের অন্যান্য অংশের মতো সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন ও এল নিনোর কারণে ব্রাজিল অস্বাভাবিকভাবে চরম আবহাওয়ার শিকার হয়েছে। দেশের অনেক জমি প্রচণ্ড বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু অঞ্চল আবার ভয়ঙ্কর শুষ্ক মৌসুমে অস্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে গেছে। বিশ্বের বৃহত্তম নদী আমাজনের পানির স্তর গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৩০ সেমি. কমছে।