বিশ্বের প্রথম ভাসমান মসজিদ নির্মাণ করছে দুবাই
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম
বিশ্বে প্রথমবারের মতো ভাসমান মসজিদ নির্মাণ করছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাই। নামাজ আদায়ের পাশাপাশি দেশের পর্যটন শিল্পেও এক অনন্য আকর্ষণ যোগ করবে এই মসজিদ। নির্মাণ খরচ আনুমানিক ৫ কোটি ৫০ লাখ আমিরাতি দিরহাম। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১৬৪ কোটিরও বেশি।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পটির ঘোষণা দেয় দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিস বিভাগ (আইএসিএডি)। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইএসিএডির মহাপরিচালক ড. হামাদ আল শেখ আহমেদ আল শাইবানিসহ বিভাগের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিশিষ্ট কর্মকর্তারা। ইসলামি পর্যটনকে আরও শক্তিশালী করতে উচ্চাভিলাষী এই ধর্মীয় প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। গাল্ফ নিউজ।
মসজিদটির সঠিক অবস্থান এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে এটি উপকূলের খুব কাছাকাছি হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগের কালচারাল কমিউনিকেশন কনসালট্যান্ট আহমেদ খালফান আল মনসুরি। মসজিদে আসা পর্যটক ও নামাজ আদায়কারীরা মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত একটি সেতু দিয়ে মসজিদে ঢুকবেন বলে জানান তিনি।
তিন তলা বিশিষ্ট মসজিদটির এক তলা থাকবে সাগরের নিচে। আর বাকি দুই তলা পানির উপরে। ২ হাজার বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত মসজিদের নির্মাণকাজ চালু হবে চলতি বছরের অক্টোবরে। নির্মাণে সময় লেগে যাবে প্রায় ১২ মাস।
মসজিদের প্রথম তলায় থাকবে নামাজ আদায়ের জায়গা। যাতে একসঙ্গে ৫০ থেকে ৭৫ জন মুসলি নামাজ আদায় করতে পারবেন। কিছু গণমাধ্যম জানিয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথমদিকে ৬০০ মুসল্লির জন্য বিস্তৃত পরিসরে এটি উন্মুক্ত করা হবে।
প্রথম তলায় ওজুর সুবিধা ও ওয়াশরুমের সুবিধাও থাকবে। দ্বিতীয় তলায় থাকবে ইসলামিক বক্তৃতা ও কর্মশালার আয়োজনের জন্য একটি বহুমুখী হল। আর তৃতীয় তলায় থাকবে কুরআন প্রদর্শনী কেন্দ্র। খালিজ টাইমসের শেয়ার করা একটি ছবিতে দেখা যায়, মসজিদের অবকাঠামোর পানির উপরের অংশে থাকবে বসার জায়গা আর একটি কফি শপ। নিচতলার নামাজের কক্ষে বসে সমুদ্রও দেখতে পারবেন মুসলিরা। এ লক্ষ্যেই নামাজঘরের একপাশে বিশাল একটা কাচের দেওয়াল দেওয়া হবে।
মসজিদটি সব ধর্মের মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে দর্শনার্থী নারী-পুরুষ প্রত্যেককেই পরিধান করতে হবে শালীন পোশাক। মেনে চলতে হবে ইসলামিক ঐতিহ্য ও রীতিনীতি। নারীদের ক্ষেত্রে মাথা-কাঁধ ঢাকা থাকে এমন পোশাক।
‘দুবাইয়ে ধর্মীয় পর্যটন প্রকল্প’র লক্ষ্য হলো একটি বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে দুবাইয়ের মর্যাদা প্রচার করা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঘোষিত ‘দুবাই কৌশল-২০২৫’ সালে দুবাইকে বিশ্বের সর্বাধিক পর্যটকের শহরে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পটি চালু হলে এদেশে পর্যটকদের পরিদর্শনের হার ৩ থেকে ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রেলিজিয়াস ট্যুরিজম ইনিশিয়েটিভের প্রধান ড. আবদুল্লাহ ইব্রাহিম আব্দুল জব্বার বলেন, এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত থাকবে দুবাই ইফতার, ধর্মীয় প্রতিনিধিদের একটি অনন্য সমাবেশ আর ঐতিহাসিক, নতুন আর বিশিষ্ট মসজিদ পরিদর্শনসহ একাধিক উদ্যোগ। আল মনসুরি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বৈশ্বিক পর্যটন সম্ভাবনা রয়েছে।’ এ সময় তিনি নিরাপত্তা, আতিথেয়তা আর বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের খ্যাতির কথা উল্লেখ করে সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনে পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।