জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন সোমবার শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের দেড় শতাধিক রাষ্ট্রপ্রধান যোগ দিচ্ছেন এবারের অধিবেশনে। এ বছর সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু ইস্যুর পাশাপাশি প্রাধান্য পাবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে সাধারণ সভার আলোচনা। মঙ্গলবার উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক শুরু হবে। ‘বিশ্বাস, পুনর্গঠন ও বিশ্ব সংহতির পুনরুদ্ধার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের বার্ষিক আয়োজনের মধ্যে এই বিতর্কের প্রতি নজর থাকে বিশ্ববাসীর। এই বিতর্কে বিশ্বনেতারা আগামী বছরের জন্য তাদের অগ্রাধিকার তুলে ধরার সুযোপ পান। গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সহযোগিতার আহ্বান জানান। কখনো কখনো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমালোচনা করেন।
সাধারণত প্রথম দেশ হিসাবে ব্রাজিল ভাষণ দিয়ে থাকে। দেশটির প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা এবার তার ভাষণে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাকে গুরুত্ব দিতে পারেন। জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণ করা লুলা অঙ্গীকার করেছেন, পরিবেশ ইস্যুতে ব্রাজিলকে পুনরায় বৈশ্বিক নেতার আসনে নিয়ে যাবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ আমাজন বনের সুরক্ষা জোরদার করবেন। এরপর ভাষণ দেয় স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবারের ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈশ্বিক নেতা হিসেবে ওয়াশিংটনের ভূমিকা তুলে ধরতে চেষ্টা করবেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ সালে যখন জাতিসংঘ গঠিত হয়, তখন এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করা। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে এবার নেওয়া হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিতে পারেন। একই সঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও মিলিত হবেন।
এই আলোচনা পর্বে সাধারণত বিশ্বের প্রত্যেক দেশের প্রতিনিধি নিজ নিজ রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন এবং সে বিষয়ে আলোচনা করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এই সম্মেলনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, মহামারি মোকাবিলা ও পরমাণু অস্ত্র বাতিল করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
মাত্র ৫১টি দেশ নিয়ে তৈরি হওয়া সংস্থাটির বর্তমান সদস্য দেশ ১৯৩। জাতিসংঘের প্রধান শাখা ছয়টি। যার মধ্যে তিনটি শাখাকে মনে করা হয় সংস্থাটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অপরিহার্য। এগুলো হলো- সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ ও সেক্রেটারিয়েট বা সচিবালয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সংস্থাটির একমাত্র শাখা, যেখানে ১৯৩টি সদস্য দেশের সবাই প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়। প্রতিটি সদস্য দেশই এই সভায় বক্তব্য দিতে পারে।