Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

সাগর-মহাসাগর থেকে বছরে ৬০০ কোটি টন বালু চুরি

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২৬ পিএম

সাগর-মহাসাগর থেকে বছরে ৬০০ কোটি টন বালু চুরি

নদীর বুক থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগ কমবেশি বিশ্বের প্রায় সবদেশেই আছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে চোখ কপালে উঠে যাওয়ার মতো তথ্য দিল জাতিসংঘ। বালু মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য পৌঁছে গেছে সাগর-মহাসাগরেও। 

বিশ্বে প্রতি বছরে সাগর-মহাসাগর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে ৬০০ কোটি টন বালু ও পলি। যার ফলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও সাগরপাড়ের মানুষের জীবনযাত্রায় মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। এই পরিস্থিতির জন্য অপরিকল্পিত ড্রেজিং ব্যবস্থাকে দায়ী করা হয়েছে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির ওই প্রতিবেদনে। আলজাজিরা।

বিগত কয়েক দশকে বিশ্বের ‘বালু খেকোদের’ ক্রমবর্ধমান ‘সমুদ্রগ্রাসী’  কর্মকাণ্ড নিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে জাতিসংঘের পরিবেশ বিভাগ ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি)। সেখানেই সামুদ্রিক ড্রেজিং নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি। 

এতে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতি বছর ব্যবহৃত হয় পাঁচ হাজার কোটি টন পরিমাণ বালু, কাদামাটি, পলি, নুড়ি এবং শিলা। যার মধ্যে ৪০০ থেকে ৮০০ কোটি টনের জোগান আসে মহাসাগর এবং সমুদ্র থেকে। অগভীর সমুদ্রে খনন এবং ড্রেজিংয়ের বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে উত্তর সাগর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে। আর সবচেয়ে বেশি উত্তোলনকারী দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, চীন, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডস। 

জেনেভায় এক সম্মেলনে এদিন ইউএনইপি প্রধান পাসকেল পেদুজ্জি জানান, ‘দিনকে দিন অগভীর সমুদ্রে বালু ও পলি খনন মাত্রাতিরিক্তভাবে বাড়ছে। নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে ড্রেজিং করা হচ্ছে। ২০১২-য় এই পরিমাণ ছিল ৪০০ কোটি টন।’ এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দু’বছরের মধ্যে সামুদ্রিক বালু চুরির পরিমাণ ৮০০ কোটি টন ছাপিয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অবৈধভাবে সামুদ্রিক বালু ও পলি তোলার হটস্পট আমেরিকার পূর্ব উপকূল। সঠিক তথ্য হাতে পেতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এই এলাকায় বেআইনি বালু তোলার পরিমাণ অন্তত ২৫ শতাংশ বেড়েছে বলে রিপোর্টে স্পষ্ট করা হয়েছে।

বেআইনিভাবে সামুদ্রিক বালু ও পলি তোলার জেরে যে ক্ষতি হচ্ছে জেনেভা সম্মেলনে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন পেদুজ্জি। বলেন, প্রথমত, এভাবে বালু ও পলি তোলার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে স্তন্যপায়ী প্রাণীর ওপর। তিমিসহ বেশ কিছু জলজ জীব এর জেরে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হতে পারে। এছাড়া অবৈধভাবে বালু ও পলি তোলার জেরে জাহাজ দুর্ঘটনা বাড়তে পারে। পেদুজ্জির কথায়, ‘এখনই যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের কিছ– জায়গায় জাহাজের গতিপথ পালটে দিতে হয়েছে।’ সামুদ্রিক বালু কাটার পরিমাণ বর্তমানে আফ্রিকা ও ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় বাড়ছে বলে জানা গেছে। তুলনামূলকভাবে এশিয়ার উপকূলগুলোর অবস্থা ভালো বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিনিয়ত বালু তোলার কারণে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। এতে ধ্বংস হচ্ছে উপকূলীয় পরিবেশ। হুমকিতে পড়ছে মেরু ভাল্লুকসহ তিমি, সিলদের মতো সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীরা। এ সংকট থেকে সামুদ্রিক পরিবেশ ও প্রাণীদের বাঁচাতে বিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম