Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

আন্তঃসরকারি জরিপ

বিয়ে, বাচ্চায় মন নেই দ. কোরিয়ার নারীদের

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১০:১৯ পিএম

বিয়ে, বাচ্চায় মন নেই দ. কোরিয়ার নারীদের

বিয়ে, বাচ্চা-কাচ্চা, সংসারে ক্রমেই অনীহা জমছে দক্ষিণ কোরিয়ার নারীদের। নতুন প্রজন্মের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারীর মধ্যে সংসার নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির দেখা মিলছে। 

জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন চেষ্টা, অর্থনৈতিক উদ্বিগ্নতা, বিকৃত যৌনাকাঙ্ক্ষা ও শ্রেণিবৈষম্যের কারণে দ্বিধায় ভুগছেন দেশটির নারীরা। নিরাপত্তাহীনতার উৎকণ্ঠা এবং বিচ্ছিন্ন সহিসংতার ঘটনাগুলোও তাদের দু’পা পিছিয়ে দিচ্ছে। 

বিয়ের পর ক্যারিয়ার ও চাকরি নিয়ে সমঝোতার কথা ভেবেও অনেকে এগোতে পারছেন না। ২০১২ সালে বিয়ে নিয়ে ৫৬.৫ শতাংশ মানুষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও এখন তা কমে ৩৬.৪ শতাংশে। বৃহস্পতিবার সিএনএনে প্রকাশিত অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) এক জরিপে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য উঠে এসেছে। সিএনএন। 

আন্তঃসরকারি এই সংস্থার (ওইসিডি) তথ্যানুসারে, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতির কারণে নারীরা অবিবাহিত থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। একেবারেই আস্থা নেই বৈবাহিক সম্পর্কে। এমনই একজন ২৪ বছর বয়সি জ্যাং ইয়ান-ওয়া। 

তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই সন্তান নেব না। আমার সে পরিকল্পনা নেই। একটি পরিবারের অংশ হওয়ার চেয়ে আমি একা এবং স্বাধীন থাকতেই পছন্দ করি।’ সন্তান নেবার জন্য যে শারীরিক ধকল সইতে হয় সেজন্য প্রস্তুত নন তিনি। সন্তান জন্ম দিলে পেশাগত ক্ষতি হতে পারে বলেও তিনি মনে করেন। তিনি চান না তার এ কষ্টার্জিত পেশাগত অর্জন নষ্ট হয়ে যাক। 

ইয়ান-ওয়া’র মতো দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক নারী মনে করেন পেশা এবং পরিবার-দুটো একসঙ্গে হয় না। একটি রাখতে হলে আরেকটি ছাড়তে হবে। আবার সেখানে পুরুষদের মনোরঞ্জনের বিষয় হিসাবে দেখা হয় নারীদের। কোনো মেয়ে চাকরিজীবী হলেও সন্তান জন্মদানের পর তা লালন-পালনের ভার নারীর উপরেই বর্তায়। 

ইয়ান-ওয়া আরও বলেন, শুধু বিয়ে নয়, তিনি ছেলে বন্ধুও চান না। এর একটি কারণ হচ্ছে ছেলে বন্ধুর মাধ্যমে পর্নোগ্রাফির ভিকটিম হবার সম্ভাবনা থাকে। সম্পর্ক ভেঙে যাবার পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেক ছেলে তাদের মেয়ে সঙ্গীর অন্তরঙ্গ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। 

অনেক শিক্ষিত মহিলা যাদের স্থায়ী চাকরি আছে তারা ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে সন্তান লালন পালন করছে। এমনকি সে দেশে একটি শব্দ প্রচলিত। ‘বিহন’ যার অর্থ সেই নারী বিয়ে ত্যাগ করতে পছন্দ করে। গত বছর যাদের জরিপে দেখা যায়, অর্ধেকের বেশি নারী বিয়ের পরেও সন্তান ধারণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। 

২০১৮ সাল থেকে বিষয়টি ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলছে। রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে, একক অভিভাবকত্বের ধারণাটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। উত্তরদাতাদের প্রায় ৪০% বলেছেন যে, তারা বিয়ে ছাড়াই সন্তান ধারণ করতে পারে।

গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রজনন হার, ইতিমধ্যেই বিশ্বের সর্বনিম্ন। ০.৭৮-এ নেমে আসা এ হার বর্তমানে জাপানের (১.৩) থেকেও অনেক কম। এ সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টাগুলো অনেকাংশে অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। 

সরকার গত ১৬ বছরে ২০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে যাতে আরও বেশি মানুষ সন্তান ধারণে উৎসাহিত করা যায়। তবে সরকারের এ প্রয়াসগুলো ব্যর্থ হচ্ছে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম